নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় নিয়মিত খাজনা প্রদান, খারিজ ও দখলে থাকা আব্দুল বারী নামে এক ব্যক্তির জমির মালিকানা বাতিল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান সালমান হাবীব শুনানি শেষে জমির মালিকানা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি দখলে থাকা জমির মালিককে আপিলের পরামর্শ দেন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়ায় মরহুম আব্দুল বারী রেজিস্ট্রি দলিলমূলে বোয়ালিয়া মৌজা, খতিয়ান নাম্বার ৪০১, ২৯১৬ দাগে ১৪ শতক এবং ২৯০৪ দাগে ১২ শতাংশ জমি কবলা করেন। এরপর থেকে ওই জমিটির খারিজ ও নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে ভোগদখল করে আসছিলেন তিনি। বর্তমানে জমিটির ফসল রক্ষায় চারিদিকে ইটের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। হঠাৎ জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বোয়ালিয়া গ্রামের তৌহিদুর রহমান প্রিন্স নামে এক ব্যক্তি ১৯৭৭ সালের একটি দলিলের ভিত্তিতে ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। ইতোমধ্যে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে নওগাঁ সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি হয়।
মরহুম আব্দুল বারীর পক্ষে মো. মুমিনুল বলেন, আইনানুগভাবে জমিটি কেনা হয়েছে। খারিজও করা হয় এবং নিয়মিত খাজনাও দেওয়া হচ্ছে। হঠাৎ ৫০ বছর আগের একটি দলিল দেখিয়ে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেকে সেই জমির মালিক দাবি করে বসেন। সহকারী কমিশনার ভূমি ওই জমির মালিকানা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। শুনানির দিনে বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে তিনি অশোভন আচরণ করেন এবং তার অফিস থেকে আমাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
জমির মালিকানা দাবি করা ব্যক্তি তৌহিদুর রহমান প্রিন্স জানান, জমির মালিকদের কাছ থেকে একজন ১৯৭৭ সালে এবং অপরজন মরহুম আব্দুল বারী ২০০৯ সালে জমি কবলা করেন। ১৯৭৭ সালে যিনি জমি কবলা করেছেন তার কাগজপত্র সম্পূর্ণ রয়েছে। আবার পরবর্তীতে আব্দুল বারী জমি কবলা করে ২০০৯ সালের দলিলমুলে খারিজ করেন ও খাজনা দিয়েছেন। সেইসাথে ওই জায়গাটি প্রাচীর দিয়ে তারা দখলে রেখেছে। আমার সব কাগজপত্র সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে জমা দিয়েছি এবং ওদের খারিজ বাতিল করার দাবি জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
নওগাঁ জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার সরকার জানান, আব্দুল বারীর নামে কবলাকৃত সম্পত্তির খাজনা, খারিজ ও দখল সবই রয়েছে। একযুগেরও অধিক সময় দখলে থাকা জমিটির মালিকানা বাতিলের সিদ্ধান্ত উচ্ছেদ মামলা ছাড়া হঠাৎ করে নেয়া ঠিক হবে না।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান সালমান হাবীব বলেন, দু'পক্ষের উপস্থিতিতে কাগজ ঘেঁটে শুনানিতে জমির মালিকানা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সাথে মরহুম আব্দুল বারীর পক্ষের লোকজনদের আপিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available