সাইফুল ইসলাম সায়েফ, মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা'র প্রভাবজনিত জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টি থেকে মাঠে থাকা লবণ সংরক্ষণ করতে গিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৩ লবণ চাষির মৃত্যু হয়েছে। ঝড় বাতাসে ভিজে ঠান্ডাজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়। এ সময় ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে অন্তত আরও ১৬ জন লবণ চাষী।
১৪ মে রোববার উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজির পাড়া ও পানিরছড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ঠান্ডা জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হওয়া লবণ চাষিরা হলেন- উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজীর পাড়া গ্রামের আবুল মৃত ফজলের পুত্র রিদোয়ান প্রকাশ ধলাইয়া (৩৫), পানিরছড়া গ্রামের আকতার কবিরের পুত্র মুহাম্মদ নেছার (৩২) ও পানিরছড়া বারঘর পাড়ার মৃত মতনের পুত্র মো. আনছার।
রিদুয়ানের ছোটভাই জাকের হোসেন জানান, তার বড় ভাই একই এলাকার মাস্টার আজিজুল হকের বর্গা চাষা। গতকাল দুর্যোগের সময় মাঠে থাকা লবণ সংরক্ষণ করতে ভোর ৬ টায় লবণ মাঠে চলে যায়। সারাদিন বাতাস ও বৃষ্টিতে ভিজে লবন সংরক্ষণ ও পলিথিন তোলার কাজ করাকালীন ঠান্ডাজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে মাঠে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বাড়িতে খবর দিলে লোকজন গিয়ে তাকে নিয়ে এসে কালাগাজীর পাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুস সালাম তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হোয়ানক ইউপির ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মৃত রিদওয়ান আমার ভাগিনা। সে বগাচতর ঘোনায় বর্গাজমি নিয়ে লবণ চাষ করত। সকাল থেকে সারাদিন বাতাসের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজে লবণ তোলার কারণে সে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এ সময় আমার ওয়ার্ডের কালাগাজিরর পাড়া ও হরিয়ারছড়া এলাকার আরও অন্তত ২০ জন লবণ চাষী বাতাসে বৃষ্টিতে ভিজে লবণ তোলার কারণে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে অসুস্থদের মধ্যে ৯ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- কালাগাজীর পাড়া গ্রামের মৃত হাঁচু মিয়ার পুত্র আবদুস সালাম (৪৬), আবুল হাসেমের পুত্র রাজা মিয়া (৩৫), মাওঃ গোলাম হোসেনের পুত্র আবু ছালেক (৪০), মোঃ ফোরকানের পুত্র লোকমান (২২), ধুপি'র পুত্র উপেন্দ্র বিশ্বনাথ (৩৫) ও আব্দুল জব্বারের পুত্র আবুল হাসেম (২৫)। হরিয়ারছড়া গ্রামের মৃত ঠান্ডা মিয়ার পুত্র আক্তার ফকির (৪২), ফকিরখালী পাড়ার আব্দুল হাকিমের পুত্র মোঃ আনসার (৪৫), একি এলাকার লেদু মিয়ার পুত্র শফি আলম (৩৮)।
এদিকে মৃতদের জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাদের প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন স্থানীয় সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক। অসুস্থদেরও তিনি সহায়তা করেছেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ইঞ্জিন চালিত ট্রলি গাড়ির ড্রাইভার কালাগাজীর পাড়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন বলেন, গতকাল সারাদিন বাতাসে ও বৃষ্টিতে ভিজে বিপুল পরিমাণ লবণ চাষি অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্বজনরা কাঁধে করে তাদেরকে নিয়ে আসতে দেখে আমি আমার গাড়িতে করে অন্তত ১০ জন অসুস্থ ব্যক্তিকে বাড়িতে ও হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, মূলত বৃষ্টি ও বাতাসে ঠান্ডাজনিত কারণে ওই ৩ জন লবণ চাষির মৃত্যু হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available