নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠির সাবেক মেয়র গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, পৌর মেয়র গোলাম কবির রজিনা বেগমের কাছ থেকে সন্ধ্যা নদীর ভাঙন পাড় কবলিত এলাকা ১০ লাখ টাকায় জমি ক্রয় করে। জমি বিক্রেতা রজিনা বেগম বলেন, “ বর্তমান পৌরসভার সচিব সাইফুর রহমানের সাথে নাল ১৪৪.৫৭, বাগান ৬৫.৪৫৮, ভিটা ৪৩.৩৮৫ অংশে মোট ২ একর ৫৩ শতাংশ জমি ৫ লাখ টাকা অগ্রিম এনে ১০ লাখ টাকায় বিক্রয় চুক্তি হয়।
২০২৪ সালের ১৩ মে নেছারাবাদ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস সাব-কবলা দলিল করার সময় ১০ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা মূল্যে দলিলটি সম্পাদন করায় মেয়রের বিরুদ্ধে জমি ক্রয় থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে রজিনা বেগম”। এলাকা বাসির অভিযোগ, “পৌরসভার পক্ষে দলিল গ্রহীতা মেয়র গোলাম কবির পৌর রাজস্ব তহবিল থেকে জমি ক্রয়ের নামে এ টাকা আত্মসাৎ করে”।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসন তদন্ত করলেও সুশীল সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি পাশাপাশি ফুঁসে উঠতে শুরু করছে পৌর এলাকা বাসি।
১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার নেছারাবাদ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস সূত্রে জানান যায়, “উপজেলার জলাবাড়ি মৌজার, এস,এ ৬৫, বি,এস ৫২ এর জমির পরিমাণ ২ একর ৫৩ শতাংশ জমি ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় সাব-কবলা মূল্যে ১৩ মে ২০২৪ সালে দলিলটি সম্পাদন করে বর্তমানে আত্মগোপনে থাকা নেছারাবাদ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির।
উক্ত দলিল নং ১০৬৫/২৪। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন,“ ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা সরকারি মূল্য দলিলে লেখা হলেও নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় এত দাম নেই”। রজিনা বেগম বলেন, এ আগে আমি দলিলে কত লেখা হয়েছে কিছুই জানি না, স্বাক্ষর করার সময় দেখি দলিলে ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা লেখা এসময় “১০ লাখ টাকা মূল্যের জমি, আপনারা দলিলে এত বেশি মূল্য লেখালেন কেন? জিজ্ঞাসা করলে মেয়র বলেন দলিলে সরকারি মূল্য লিখতে হয়, তা না হলে দলিল গ্রহণযোগ্য হয় না।
এর পর আমার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা সত্ত্বেও মেয়র নেছারাবাদ ইসলামি ব্যাংক মিয়ারহাট শাখায় আমার নামে একটি অ্যাকাউন্ট করে। অ্যাকাউন্ট নম্বর ৯১২৫৩৫১। দলিলে লেখা ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ওই অ্যাকাউন্টে জমা দেয়।
একই সময় চেক বইয়ের দুইটি পাতায় আমার স্বাক্ষর নেয় পৌরসভার লালন নামের এক লোক। ওই এ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকা রেখে বাকী সব টাকা ১৫ মে ২০২৪ তারিখ তুলে নেয় মেয়র। পরে জানতে পারি জমির সরকারি মূল্য না দিয়ে আমার সাথে এবং সরকারের সাথে প্রতারণা করেছে আওয়ামী লীগ নেতা মেয়র গোলাম কবির।
৫ আগস্টের আগে তার দাপটে কোনো অভিযোগ করতে পারিনি। এ ব্যাপারে ২ মার্চ ২০২৫ তারিখ পিরোজপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতারণাপূর্বক জমিক্রয়ে সুষ্ঠ বিচার প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগ করেন জমি বিক্রেতা রজিনা বেগম।
সাবেক মেয়র গোলাম কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জমি ক্রয় মূল্য শিকার করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দলিলে যে টাকা লেখা সব টাকাই চেকের মাধ্যমে রজিনাকে পরিশোধ করা হয়েছে, রজিনা কথা তাকে শুনানো হলে মেয়র বলেন এসব কথা বানোয়াট ও মিথ্যা।
সাবেক পৌর কমিশনার সাইফুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন,“ মেয়র গোলাম কবিরের চরিত্র এলাকার সবাই জানে, তিনি একজন ভ’মিদস্য, ১৫ বছরে পৌর এলাকার এমন কোন সেক্টর নাই লুটপাট করে নায়, এছাড়া সবাই জানে মহিলার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ওই জমি পৌরসভার নামে ক্রয় করেছেন মেয়র। দলিলে ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা লেখায় এলাকা ও প্রশাসন মহলে একটা আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে”।
স্বরূপকাঠি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহসিন ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মঈনউদ্দিন তারা বলেন, “বর্জ্য জন্য একটি জমি ক্রয় করা হয়, তবে টাকা ব্যাপারের ন্যূনতম কিছুই জানি না”।
পৌরসভার সচিব সাইফুর রহমানের বলেন,“ সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ক্রয়কৃত জমির মূল্য গভানংবডি এর সিদ্বান্ত মোতাবেক রাজস্ব তহবিল থেকে জমি দাতা রজিনাকে অ্যাকাউন্ট চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।
নেছারাবাদ সহকারী কমিশনার (ভূমি রায়হান মাহামুদ বলেন,“স্বরূপকাঠি পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ক্রয়কৃত জমি নিয়ে রজিনা বেগমের একটি অভিযোগ এসেছে। উক্ত অভিযোগ পত্র গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available