মাসুম লুমেন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর মনোহরপুর ইউনিয়নের বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসীর নিখোঁজ শিশু পুত্র আব্দুল্লাহ ওরফে বায়েজিদ (৪) লাশ উদ্ধারের তিনদিনের মাথায় হত্যা মামলার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।
১৬ মে মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে বায়েজিদ হত্যাকান্ড বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
পুলিশ সুপার বলেন, বড় বোনের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক ও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার ক্ষোভ থেকেই ছোট ভাই শিশু বায়েজিদকে হত্যা করা হয়েছে। আদালতে এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রেমের প্রস্তাবদাতা ও প্রধান অভিযুক্ত প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুলের ছেলে সাকিব হাসান ওরফে রোমান (১৯)।
কামাল হোসেন জানান, গত ৮ মে বিকেলে শিশু বায়েজিদ নিখোঁজ হয়। এ ব্যপারে ৯ মে সাধারণ ডায়েরি এবং ১০ মে পলাশবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন শিশুটির মা রায়হানা বেগম। সেদিনই প্রধান অভিযুক্ত প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুলের ছেলে সাকিব হাসান ওরফে রোমান (১৯) ও সোহবার হোসেনে ছেলে ও রোমানের বন্ধু শরিফুল ইসলামকে (২০) পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্তোষজনক কোনও তথ্য না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এরপর ১৪ মে আদালত আসামীদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সাকিব হাসান ওরফে রোমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরের দিন ১৫ মে রোমান আদালতে নৃসংশ এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। রোমানের দাবি, বায়েজিদের বোনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু বর্তমানে মেয়েটি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে রাগ-ক্ষোভে মেয়েটির ছোট ভাই বায়েজিদকে সে নিখোঁজের দিনই হত্যা করে।
এ ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- পলাশবাড়ী উপজেলার বালুখোলা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের ছেলে সাকিব হাসান ওরফে রোমান(১৯), তার বন্ধু ও তালুক ঘোড়াবান্ধা মধ্যপাড়া গ্রামের সোহরাব হোসেন মেকারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২০), বালুখোলা গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে খোরশেদ আলম (২১), রাজা মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান ওরফে রনি (১৯), একই গ্রামের মজিবর রহমানের স্ত্রী ছকিনা বেগম (৬০), সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের স্ত্রী ববিতা বেগম (৪৫), মোকসেদুর রহমান ওরফে বিদ্যুৎতের স্ত্রী মনিরা বেগম (২২), সাইফুল ইসলাম ওরফে শেরেকুল মন্ডলের ছেলে রোস্তম আলী মন্ডল (১৪) ও শরিফুল ইসলাম মন্ডলের ছেলে সোহাগ মন্ডল (১৬)।
উল্লেখ্য, ৮ মে সোমবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাহারুল ব্যাপারীর চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ বায়েজিদ। পরে ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের একটি ধান ক্ষেত থেকে শিশু বায়েজিদের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশু বায়োজিদরে মা রায়হানা বেগম বাদী হয়ে সন্দেহভাজন ও অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করে পলাশবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available