স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট: সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের শেষ সীমানায় অবস্থিত বানাইয়া হাওর। হাওরের ওপারেই সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা। বানাইয়া হাওরপারের মিঠাভরাং, মজলিসপুর, নেওয়া গাও, দাওরাই, কালনীচর, ফেছিসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম দুটি জেলার অন্তর্ভুক্ত। তবে যুগের পর যুগ এই এলাকার মানুষ যাতায়াতের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিগত ৩০ বছর ধরে এই এলাকার মানুষ একটি বাঁশ বেতের সেতু দিয়ে চলাচল করছেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিয়েও মিলেনি সেতুর আশ্বাস।
১৯৯৬ সালের আগে বর্ষায় নৌকা আর হেমন্তে পায়ে হেঁটে চলাচল করাই ছিল এখানকার একমাত্র ভরসা। সেই সময়ে এলাকার কিশোর-তরুণরা বানাইয়া হাওরের বরাক বিলে বাঁশের সেতু তৈরি করে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা চালু করে। সেই থেকে শুরু, এখনো চলছে বাঁশ, বেতের সাঁকো দিয়ে পারাপার। কিন্তু তিন দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্মিত হয়নি একটি স্থায়ী ব্রিজ।
এই বাঁশের সেতু দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। বর্ষায় হাওরে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে সেতুটি ডুবে যায়, ফলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। কখনো কখনো দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় সেতু, তখন আরও দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকাবাসীকে। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না, রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এই সংকট বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রবাসী কমিউনিটি নেতা কামরান কবীর বলেন, বিগত ৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সরকারের আমলে বারবার আবেদন করা হলেও কোনো সরকারই ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত থেকে গেছে বানাইয়া হাওরপারের মানুষ।
আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জমির আলী বলেন, বাঁশের সেতুর কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তার কিছু কাজ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
অবিলম্বে এখানে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণ জরুরি। এটি বাস্তবায়ন হলে দুই জেলার মানুষের জীবনমান উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আর কোনো বাধা থাকবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা বানাইয়া হাওরবাসীর।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available