মাহমুদ খান, সিলেট প্রতিনিধি: নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ১৭ মে বুধবার বিকেলে নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ শঙ্কার কথা জানান তিনি।
মেয়র আরিফ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। নিরাপত্তাকর্মীদের রাতের আঁধারে সরিয়ে নেয়া তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিবেচিত।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টায় মেয়রের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা ছয় আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেয় জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়। তারা দিন ও রাতে পালাক্রমে মেয়রের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শাপাশি মেয়রের বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করছিলেন ।
আরিফুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, তাকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে তার ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশাসনের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তা এমন আচরণ করছে, যা কোনেভাবেই কাম্য নয় ।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকাকালীন আমাকে সরকার থেকে দু’জন গানম্যান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরের মেয়াদে তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর নগরবাসীর টেক্সের টাকায় মাসিক চুক্তিতে আনসার বাহিনীর ২৪ জন সদস্যকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। শিডিউল করে সিসিকের পানি শোধনাঘার ও যান্ত্রিক শাখাসহ (যেখানে সিসিকের বিভিন্ন গাড়ি ও মেশিন রাখা হয়) গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন তারা। তাদের মধ্যে থেকে ৬ জনকে আমার বাসা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে।
মেয়র বলেন, মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে এই ৬ জনকে প্রত্যাহ্যার করে নেওয়ায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। এছাড়াও আমার বাসা-সংলগ্ন অফিসে রাখা সিসিকের লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল এখন অনিরাপদ। এটা অতি উৎসাহী হয়ে এই বাহিনীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রশাসনের অতি উৎসাহী কতিপয় কর্মকর্তারা খোদ সরকারকেও বিভ্রতকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছে। আমার বাসার নিরাপত্তা-সদস্যদের কিন্তু সরকারের নির্দেশনায় প্রত্যাহার করা হয়নি।
আগামী সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র আরিফুল হক বলেন, সম্প্রতি আমি মহানগরের যেখানে যাচ্ছি এবং আমার সঙ্গে ছবি তুলছেন যারা দেখা যাচ্ছে রাতের বেলা তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাউকে রিমান্ডে পর্যন্ত নিচ্ছে। আমি তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাকে প্রধানমন্ত্রী শপথ করিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অতি উৎসাহী কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে কীভাবে মূল্যায়ন করতে হয় সেটিও সম্ভবত ভুলে গেছেন।
মেয়র আরিফ প্রশ্ন রেখে বলেন, আমার বাসায় যদি এভাবে নিরাপত্তা দেওয়া আইনসিদ্ধ না হয় তবে দীর্ঘ ৬ বছর তারা কোথায় ছিলেন? আমি দেখছি আমার নগরবাসী থেকে আমাকে দূরে রাখার সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নগরবাসীর কাছে দোয়া চাই।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলার পর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ভবনের দেওয়ালে ফাটল ও বিভিন্ন ত্রুটির বিষয়টি তুলে ধরেন।
বাস টার্মিনাল নিয়ে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে নতুন নির্মিত টার্মিনাল ভবনের দেওয়ালে ফাটল ধরা পড়ার পরই সিসিকের উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী টার্মিনাল ভবনের নকশায় ত্রুটি রয়েছে। নকশাটি করেছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিট্যাক্ট বিভাগ এবং এসজিএমপি। তাদেরকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। ত্রুটি মেরামতের লক্ষ্যে নকশাটি সংশোধন করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া টার্মিনাল ভবনের ওয়েটিং রুমের গ্রাস ভেঙে পড়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available