ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: পাগলা ঘোড়ার ন্যায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পদতলে জনজীবন পিষ্ট হয়ে পড়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার কারণে দৈনন্দিন পারিবারিক চাহিদা মেটাতে পরিবার প্রধানদের উঠেছে নাভিশ্বাস।
বর্তমানের সংকটময় মুহূর্তে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কষ্টে দিন পার করছে দেশের অধিকাংশ মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। যারা লজ্জায় না পারছে কাউকে কিছু বলতে, না পারছে কারও কাছে হাত পাততে।
সরেজমিনে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের চিত্র। বিগত কয়েক মাসের ব্যবধানে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনিসহ অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। বর্তমানে ঘোড়াঘাটে আলু ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত মাসে ছিল ৩০ টাকা। বেগুন ৫০ টাকা, যা গত মাসে ছিল ৩৫/৪০ টাকা। কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা পূর্বের মাসে দাম ছিল ৪০ টাকা। পিয়াজ ৬০ টাকা, যা গত মাসে ছিল ৪০ টাকা। আদা ৩০০ টাকা বিক্রি, যা গত মাসে ছিল ২৬০ টাকা। রসুন ১৮০ টাকা, যা গত মাসে ছিল ১৪০ টাকা, জিরা ৮২০ টাকা যা গত মাসে ছিল ৫৫০ টাকা। শুকনা মরিচ ৫০০ টাকা, গরম মশলা ১৫০০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমরা পথের ফকির হয়ে যাবো। বিভিন্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি করছেন। সরকারকে কঠোর হাতে অতিলোভী অসাধু এসব ব্যবসায়ীদেরকে দমন করতে হবে।
সাধারণ ক্রেতারা বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যতালিকা টাঙানো এবং নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা, সেটি পর্যবেক্ষণের জন্য সব বাজারে দ্রব্যমূল্য মনিটরিং কমিটি গঠনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির শিকার প্রধানত কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবীসহ নির্দিষ্ট আয়ের কর্মচারীরা। কৃষক ফসলের যুক্তিসঙ্গত দাম পান না। শ্রমিকের মজুরি বাড়ে না। আর কর্মচারীদের বেতন দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে মিল রেখে বাড়ে না। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগতই বাড়ছে। সবমিলিয়ে মধ্যম ও নিম্নআয়ের মানুষ এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই জীবনযাত্রার মান কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি অনেকে বাড়তি খাবার কেনাও কমিয়ে দিয়েছে।
সুধীজনরা বলছেন, বিত্তবানদের জন্য দ্রব্যমূল্য প্রত্যক্ষভাবে কখনোই তেমন সমস্যা নয়। কারণ তাদের আয় প্রায় সীমাহীন। কিন্তু সাধারণ মানুষ যে আয় করে তা দিয়ে তাকে হিসাব করে চলতে হয়। এমতাবস্থায় বাজার মনিটরিং এ প্রশাসনিক নজরদারির কোনো বিকল্প নেই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available