কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। ঘটনার ১৮দিন পার হলেও বিচার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলাৎকারের শিকার কিশোরের মা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের গাগলা মন্ডলটারী এলাকায়।
অভিযোগে জানা যায়, গাগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ছমিলের ব্যবসা করেন গাগলা বলদিটারী এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রব (৫৫)। তার ছমিলে ঘোড়ার গাড়িতে শ্রমিক হিসেবে গাছ পরিবহেনের কাজ করেন বলাৎকারের শিকার কিশোর (১৫)। সেখানে কাজ করার সুবাদে আব্দুর রউফ প্রায়ই নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিত থাকে। এক সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এবং ফুসলিয়ে তার ছমিলের ভিতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বব বলাৎকার করেন। পরে এভাবে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে ৬-৭দিন বলাৎকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই কিশোর। বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন। হুমকী এবং লোকলজ্জার ভয়ে ওই কিশোর বিষয়টি কাউকে জানায়নি বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
কিশোরের মামা অটোচালক মানিক মিয়া জানান, তিনি অটোরিকশা চালানোর কারণে প্রতিরাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়। ওইদিন গত ১ মে তার ভাগিনাকে রাত করে বাড়ি ফিরতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করেন কোথায় গেছে। পরে সে জানায় বাজারে দোকানে গেছে। তার মামা কোন দোকানে গেছে জানতে চাইলেও কিছু বলেনি। পরে মানিকের সাথের একজনকে বিষয়টি খুলে বলে।
বিষয়টি ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে জানালে তারা বিষয়টি মিমাংসার কথা জানালেও মিমাংসা হয়নি। পরে বিষয়টি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কিশোরের মা।
আব্দুর রউফ এর আগেও অনেকবার এ ধরণের ন্যাক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে।
বলাৎকারের শিকার কিশোর জানায়, আমি কাজ করতে গেলে প্রায়ই আমাকে বিভিন্নভাবে লোভ দেখাতো। এর আগে আমাকে দুইশ টাকা ধার দিয়েছে পরে আমি টাকা পরিশোধ করতে চাইলে নেয়নি। এছাড়াও আমি যাতে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারি সে কারনে একটি পুরনো বাটন মোবাইল সেট দিয়েছে। সে বলেছে যখন যেখানে মোবাইল করে ডাকবে আমাকে যেতে হবে। পরে আমি ফোন না ধরলে এবং তার ডাকে সাড়া না দিলে আমার সাথে রাগারাগি করে। এছাড়াও আমি কাউকে এ বিষয়ে বললে আমার ক্ষতি করবে। শেষদিন আব্দুর রউফ তার ছমিলে আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করেছে। এভাবে আমার সাথে ৬-৭দিন খারাপ কাজ করেছে।
কিশোরর মা জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় আব্দুর রউফ। পরে রাতে বাড়ি ফিরলে তার মামার মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলের সাথে খারাপ কাজ করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে আব্দুর রউফের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ফাঁসানোর জন্য পায়তারা করছে।
নেওয়াশী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য আমিনুর রহমান জানায়, ঘটনাটি আমাকে ওই কিশোরর পরিবার জানিয়েছেন। আমরা মিমাংসার উদ্যোগ নিলেও বিবাদী বসতে চাচ্ছে না আর চেয়ারম্যান ও সময় দিতে পারছে না। চেয়ারম্যান সময় দিলে বসে মিমাংসা করা হবে।
নেওয়াশী ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজান রহমান মুকুল বলেন, বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে, ব্যস্ততার কারণে আসলে বসা হয়নি। আর তারা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। আর আব্দুর রউফ আমাদের আওয়ামী লীগের গ্রাম কমিটির সভাপতি। বিষয়টি আসলে সাজানো। শত্রুতা করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ রকম একটি ষড়যন্ত্র করছে। অভিযোগকারীরা এটি প্রমাণ করুক।
নাগেশ্বরী থানার নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমান আশিক মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আর এটিতো অভিযোগ হওয়ার কথা না ভাই, এটি তো মামলা হওয়ার কথা। যাইহোক আমিতো এখন মিটিংএ আছি। আমি তাহলে আমার অফিসারের সাথে কথা বলি। আপনি এক সময় অফিসে আসেন। বিষয়টি জেনে আপনাকে জানাব।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available