• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে চৈত্র ১৪৩১ ভোর ০৫:১১:১৫ (13-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে চৈত্র ১৪৩১ ভোর ০৫:১১:১৫ (13-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

বাবা হারা সেই শিক্ষার্থী নাহিদের পাশে দাঁড়ালেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক

১২ এপ্রিল ২০২৫ দুপুর ০১:১৯:২৬

বাবা হারা সেই শিক্ষার্থী নাহিদের পাশে দাঁড়ালেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লায় ‘বাবার লাশ বাড়িতে রেখে গেলেন পরীক্ষা দিতে, ফিরে এসে দাফন’ শিরোনামে এশিয়ান টিভি অনলাইনসহ বিভি্ন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পরীক্ষার প্রথম দিনে বাবাকে হারানো এসএসসি পরীক্ষার্থী নাহিদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।

একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা আক্তার হোসেনকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ দিশেহারা অস্বচ্ছল পরিবারকে নগদ আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধার আওতায় আনতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

১১ এপ্রিল শুক্রবার সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের পক্ষে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের বড় হাড়গিলা গ্রামের নাহিদের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন।

আর্থিক সহায়তা হিসেবে তিনি নাহিদের মায়ের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং নাহিদের হাতে পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ইলিয়াছ কাঞ্চন এবং মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান।

বাবা হারানো এসএসসি পরীক্ষার্থী নাহিদ জানায়, আমার বাবা ৪মাস ধরে টিবি রোগে আক্রান্ত। ঋণ করে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বাবার চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। গত মঙ্গলবার বিকেলে নাকে মুখে রক্ত বের হতে থাকলে বাবাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। বুধবার সকাল থেকে আমি বাড়িতে থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু রাত দেড়টায় বাবার মৃত্যুর খবর পাই। বৃহস্পতিবার সকালে বাবার নিথর দেহ বাড়ির উঠোনে একা রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার হলে বসেও বাবাকেই ভাবছিলাম।

নাহিদ আরও জানায়, একদিকে জীবনের প্রথম পরীক্ষা যুদ্ধ শুরু, অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বাবাকে হারানো। ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার যেন আমার জীবনে ট্রাজেডি হয়ে এসেছে। তবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক স্যার ও লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ম্যাডামের নগদ আর্থিক সহায়তা ও আমাদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসে আমি কিছুটা ভরসা পেয়েছি। স্যারদের ধন্যবাদ। বাকি পরীক্ষাগুলো যেন ঠিকভাবে দিতে পারি, সবাই দোয়া করবেন।

লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বলেন, পরীক্ষার প্রথম দিনে আমি উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। কিন্তু কেউ পরীক্ষার্থী নাহিদের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমাকে অবগত করেনি। বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে  প্রতিবেদন দেখে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি।

প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক স্যারের নজরেও পড়েছে। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমি নাহিদের বাড়িতে গিয়ে নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা ও পরীক্ষার উপকরণ দিয়ে এসেছি। ভবিষ্যতেও নাহিদের পরিবারকে বিভিন্ন সরকারি সুবিধার আওতায় রাখতে আশ্বাস দিয়েছি।

উল্লেখ্য, বুধবার দিবাগত রাত দেড় টায় নাহিদের বাবা আক্তার হোসেন (৪৫) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  বৃহস্পতিবার সকালে দাফনের সম্ভাবনা থাকলেও নাহিদ এসএসসি পরীক্ষার হলে যাওয়ায় দাফনের সময় পিছিয়ে দুপুর ২টায় দেওয়া হয়।

ওইদিন দুপুরে হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে বের হয়ে নাহিদ নিজ বাড়িতে গিয়ে বাবার লাশের খাটিয়া কাঁধে তুলে নেয় এবং জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করে। সে এবছর স্থানীয় মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ