নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই নারী লামিয়ান ও সপ্নাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ও শিশু পুত্র আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছে।
১১ এপ্রিল শুক্রবার উপজেলার মিজমিজি থেকে বস্তা বন্দী অবস্থায় ওই দুই নারীসহ এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মরদেহ উদ্ধারের সময়েই নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন (২৪) কে আটক করে পুলিশ। পরে দায়ের করা হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয় বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়।
এদিকে শুক্রবার রাতেই নিহত লামিয়া ও স্বপ্নার বোন মুনমুন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন (২৪), শ্বশুর মো. দুলাল (৫০) এবং তার ননদ মোসা. শিমু (২৭)। মামলার এজাহারেও পারিবারিক কলহের বিষয়টি উল্লেখ করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিনের সাথে পাঁচ বছর পূর্বে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতেই লামিয়ার শ্বশুর ও ননদ প্রায় সময় তাকে মারধর করতো। বিয়ের পরে লামিয়া-ইয়াসিন দম্পতির একটি পুত্র সন্তান হয় আব্দুল্লাহ (৪)। ইয়াসিন মূলত মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী-সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দিতো না। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া ও মারামারি হতো বলে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে লামিয়া তার ছেলে আব্দুল্লাহ (৪) ও বড় বোন স্বপ্না (৩৫) কে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকায় মোক্তার হোসেনের বাড়িতে আলাদা ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। নিহত লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার মুজিব ফ্যাশন গার্মেন্টস এ হেলপার হিসাবে চাকরি করতো। ইয়াসিন প্রায় সময় সেই বাড়িতে গিয়ে লামিয়ার কাছে টাকা দাবি করতো। টাকা না দিলে ইয়াসিন শারীরিক নির্যাতনসহ খুন জখম করার হুমকি প্রদান করতো।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয় গত ৭ এপ্রিল দুপুরে মুনমুন ও তার স্বামী লামিয়াদের ভাড়াটিয়া বাসায় যায়। তাদের বাসা থেকে আসার পর হতে লামিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাদের খোঁজ নেয়ার জন্য সেই বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। স্বজনসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাদের। পরে শুক্রবার দুপুরে লামিয়াদের ভাড়া বাড়ির সামনে রাস্তার পাশ থেকে তাদের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় লামিয়া, স্বপ্না ও শিশু আব্দুল্লাহকে হত্যা করা। প্রথমে লামিয়াকে হত্যা করা হয়। পরে স্বপ্না ও শিশু আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়। লামিয়া ও স্বপনাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এবং আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় জানায় পুলিশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available