শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে রহস্যময় আগুনে পুড়ে যাওয়া এক বিধবার বসতঘর পুনর্নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদে এবং বসতঘর পুনর্নির্মাণে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
১৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকুমারিয়া ইউনিয়নের উত্তর চরকুমারিয়া হাওলাদার কান্দি গ্রামে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ভুক্তভোগী পরিবার।
জানা গেছে, উত্তর চরকুমারিয়া হাওলাদার কান্দি গ্রামের মৃত মাহবুব আলম খসরু সরদারের বিধবা স্ত্রী রোকেয়া (শান্তি) বেগম স্থানীয় চরচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়ার কাজ করেন। ছেলে সন্তান না থাকায় তার একমাত্র মেয়ে বুবলী আক্তার স্বামী সন্তান নিয়ে মায়ের বাড়িতেই বসবাস করেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ আগুন লেগে বিধবা রোকেয়া (শান্তি) বেগমের বসতঘরটি পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে ঘরে থাকা সমস্ত মালামাল ও কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে নগদ অর্থসহ প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে আগুন লাগার কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এ বিষয়ে সখিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রোকেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার পুড়ে যাওয়া বসতভিটায় পুণরায় ঘর নির্মাণ করতে গেলে প্রতিবেশী ফারুক ওঝা, তার ছেলে নুর আলম ওঝা, শাহালম ওঝা গং আমাদেরকে ঘর তুলতে বাধা দেয়। ঘর তুলতে তারা পদে পদে আমাদের হয়রানি করে আসছে। এতে ধারণা করছি, আমাদের বসতঘর আগুণে পুড়ে যাওয়ার পেছনে তাদের হাত আছে। ঘর তুলতে গেলে তারা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি প্রশাসন ও সরকারের কাছে আমার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা এবং বসতঘর পুনর্নির্মাণে সহযোগিতা চাই।
রোকেয়া বেগমের মেয়ে বুবলি বেগম বলেন, আমি ও আমার স্বামী ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর জন্য ঢাকা যাই। বাড়িতে আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ও বৃদ্ধ মা ছিল। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আমার মা পানি আনতে পুকুরে গিয়েছিল এবং আমার মেয়ে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ আমাদের ঘরে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে যায়। অল্পের জন্য আমার মেয়ে প্রাণে বেঁচে যায়। পুড়ে যাওয়া বসতভিটায় পুনরায় ঘর তুলতে গেলে ফারুক ওঝা ও ছেলেরা বাধা দেয়। ঘর তুলতে গেলে তারা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমাদের ধারণা তারাই আমাদের ঘরে আগুন দিয়েছে। আমি প্রশাসন ও দেশবাসীর কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করছি।
রোকেয়া বেগমের মেয়ে জামাই সুলতান মাহমুদ বলেন, উত্তর চরকুমারিয়া মৌজার ১৩৩৭ নং খাতিয়ানে ১৩০৯ নং দাগে চার শতাংশ জমি আমার শাশুড়ি শান্তি বেগম ক্রয়সূত্রে মালিক। তার নামে বি.আর.এস. রেকর্ড হয়েছে। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত তারা এই জমিতে বাড়িঘর করে বসবাস করে আসছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলা আমার মেয়ে একা ঘরে যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন ঘরটিতে আগুন লেগে পুড়ে যায়। কীভাবে আগুন লেগেছে তা আমাদের কাছে বিরাট রহস্য। যখন আমরা পুনরায় ঘর তুলতে যাই, তখনই প্রতিবেশী ফারুক ওঝা ও তার ছেলেরা আমাদের ঘর তুলতে বাধা দেয়। চাঁদা না দিলে তারা ঘর তুলতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। প্রশাসনের কাছে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা যাতে ঘর তুলে শান্তিতে বসবাস করতে পারি তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে মনসুর আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম শফি খান, নাজমুল ইসলাম, মনির হাওলাদার, দাদন কাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available