রংপুর ব্যুরো: ‘গ্রামবাংলার সাধারণ কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কেনা, গুদামজাত করা এবং প্রয়োজনে বিদেশে রপ্তানি করার মতো উদ্যোগ নেওয়া ও অবকাঠামো গড়ে তোলা উচিত। আর এ মুহূর্তে সরকারকে কৃষকের পাশে থাকতে হবে। কেননা কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ।’
২০ এপ্রিল রোববার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে কৃষক ঐক্য পরিষদ আয়োজিত পথসভা থেকে সরকারের প্রতি এ দাবি জানানো হয়।
‘যে কৃষক যোগায় ক্ষুধায় অন্ন, সে কৃষক আজ কেন বিপন্ন’ স্লোগানে গত ১৭ এপ্রিল দশ দফা দাবিতে বগুড়া থেকে পঞ্চগড় অভিমুখে সপ্তাহব্যাপী লং মার্চ শুরু করে কৃষক ঐক্য পরিষদ। লং মার্চের চতুর্থ দিনে রোববার দুপুরে বিভাগীয় নগরী রংপুরের প্রবেশদ্বার মডার্ন মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে পথসভায় মিলিত হয়।
পথসভায় কৃষক নেতারা বলেন, কৃষিখাত দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হলেও কৃষকেরা আজ নানা কারণে দুর্ভোগ, হয়রানি ও লোকসানের শিকার। কৃষকের সমস্যা জিঁইয়ে রেখে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে চাঙ্গা অবস্থানে নেওয়া সরকারের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কারণ কৃষকেরা কৃষিবিমুখ হলে অর্থনৈতিকভাবে দেশ আরো পিছিয়ে যাবে। যেকোনো ফসলের লোকসান থেকে কৃষকদের বাঁচাতে সরকারকেই উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। তা না হলে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
কৃষক ঐক্য পরিষদের রংপুর জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য রাখেন- পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ মঞ্জুর আলম, মহাসচিব সুলতান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নজরুল ইসলাম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাহাবুদ্দিন ফরাজী ও দপ্তর সম্পাদক মাকসুদুর রহমান খান।
এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে কৃষক ঐক্য পরিষদের কুড়িগ্রাম জেলা সভাপতি মাসুদুর রহমান জালাল, লালমনিরহাট জেলা সভাপতি রেজাউল করিম, রংপুর জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান, কাউনিয়া উপজেলা সভাপতি আরিফ আজাদ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় কৃষকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১০ দফা তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।
দাবিসমূহ হলো - ১. আলু ও পেঁয়াজ কমিশন গঠন এবং উপজেলা ভিত্তিক সংরক্ষণাগার ও রপ্তানি কেন্দ্র স্থাপন, ২. ঢাকাসহ সারা দেশে কৃষকের বাজার প্রতিষ্ঠা, ৩. কৃষিঋণ ও প্রণোদনা সহজীকরণ, ৪. সিন্ডিকেটমুক্ত করে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, ৫. কৃষিপণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি ও টোল প্রথা বন্ধ করে রেলবগি বরাদ্দ করা, ৬. খাস ও পতিত জমি বরাদ্দসহ কৃষকদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু, ৭. সরকারিভাবে কৃষি বীমা ও আর্থিক সহায়তা ব্যবস্থা, ৮. সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কৃষকদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড়ে বিশেষ চিকিৎসাসেবা প্রদান নিশ্চিত করা, ৯. জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন কমিটিতে কৃষক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, ১০. আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সরবরাহ ও বাস্তবমুখী করা।
পথসভা শেষে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্য লং মার্চ শুরু করে পরিষদের নেতাকর্মীরা। এতে বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার কৃষকরা অংশ নিয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available