মোহাম্মদ শফিক, জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার): কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হওয়া তিন বন্ধুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ নিহতদের পরিবার। তাদের অভিযোগ, পুলিশের গাফেলতির কারণেই এই করুন পরিণতি।
এরআগে গতকাল ২৪ মে বুধবার দুপুরে উপজেলার দমদমিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব ও পুলিশের দুটি টিম। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগরপাড়ার মোহাম্মদ ইউছুপ, চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের রুবেল ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান সরকার।
নিহত ইমরান সরকারের মা হামিদা বেগম ও পিতা ইব্রাহিমসহ অন্যান্য স্বজনদের দাবি, ‘২৮ এপ্রিল নুনিয়ারছড়া ইমরান সরকার, চৌপলদন্ডীর রুবেল ও ঈদগাঁহর ইউচুপসহ ৩ বন্ধু মিলে পাত্রী দেখতে যান টেকনাফের জাহাজপুরা এলাকায়। পরে এক সিএনজি চালকের মাধ্যমে পরিবার জানতে পারে পাত্রী দেখতে গিয়েই অপহরণের শিকার হিয়েছে তাঁরা। পরে ২৯ তারিখ ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে পরিবারের কাছে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে পাঠায় অপহরণকারীরা। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী পরিবার তাদের উদ্ধার করতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ টেকনাফ থানায় যোগাযোগ করতে বলে। সেই মতে ভুক্তভোগীদের পরিবার টেকনাফ থানায় গিয়ে ওসির পা ধরে আকুতি-মিনতি করার পরেও কোন প্রকার সহায়তা মিলেনি বলেও অভিযোগ নিহতদের পরিবারের।
এরপরে তারা কক্সবাজার মডেল থানা ও টেকনাফ থানায় ঘুরাঘুরি করার পরেও কোনো সুরাহা মিলেনি। পুলিশের গাফতলি ও কালক্ষেপণ কারণে তাদের আজ এই করুন পরিণতি বলে দাবি করেন তারা।
জানা যায়, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করেছে র্যাব। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুত্রে জানা যায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে একদল অপহরণকারী পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায় তাদের। পরে তাদের ছেড়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের ভিডিও পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি সংস্থায় যোগাযোগ রক্ষা করেন। কিন্তু গহীন জঙ্গল এবং অপহরণকারীরা বার বার স্থান পরিবর্তন করায় তাদের উদ্ধার এবং জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি।
অভিযোগের এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান,‘পরিবারের অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ ভুক্তভোগীদের সবসময়ই সহযোগিতা করেছে। একজনকে আটকও করেছে। তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে ৩জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।’
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে এনে তাদের সুরতহাল প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available