সজীব আহমেদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য গৃহীত ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসুচি (ইজিপিপি) সংশ্লিষ্ট এলাকায় কর্মহীনদের কর্মসংস্থান সৃস্টির পাশাপাশি গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে বড় ভুমিকা রাখছে। এসব কর্মসুচি বাস্তবায়নের ফলে একদিকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অতিদরিদ্ররা অভাব-অনটনের সময় কাজ পাচ্ছে, অন্যদিকে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, কাঁচা রাস্তা উন্নয়ন ও সংস্কার করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করেছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নে দীর্ঘদিন পর ২ টি প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা-ঘাটের দৃশ্যমান উন্নয়নের ফলে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গুলিশাখালী ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানে (৪০ দিনের কর্মসূচি) ইজিপিপি প্রকল্প স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্ববধানে বাস্তবায়ন করা হয়ছে। অন্য একটি প্রকল্প ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে আওতায় বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় (পিআইও)। প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়নের ২ টি প্রকল্পে মোট ১৩৯ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা এবং প্রত্যেক দলের নেতাকে আরও ৫০ টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করা হয়েছে।
সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গুলিশাখালীতে মোশারফ মিয়ার বাড়ী থেকে জালাল পাহলানের বাড়ী হয়ে রবি জালোর বাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মানে ৫০ জন শ্রমিক এবং হরিদ্রাবাড়ীয়া গ্রামের গনি হাং এর বাড়ী থেকে খালেক হাওলাদারের বাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তা পুনঃনির্মান প্রকল্পে ৮৯ জন শ্রমিক সংস্কারের কাজ করছেন।
হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্ধা শ্রমিক জামাল রাঢ়ী বলেন, ‘মোরা ডেলি ৮৯ জন শ্রমিক ৪০ দিনে ৪০০ টাহা কহরা মোবাইলে পাইছি’। শ্রমিক আব্বাস বলেন, ‘গত বছর এইহানে কোন রাস্তা আছেলেনা এ বছর চেয়ারম্যান মোগো রাস্তা দেছে। এহন মোগো পোলা মাইয়াগো স্কুলে যাইতে কম সোমায় লাগবে’। শ্রমিক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মোরা ৫০ জন শ্রমিক ৪০ দিন মোবাইলে ৪০০ কইরা টাহা পাইছি’।
হরিদ্রাবাড়ীয়া স্থানীয় স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী আব্দুর রহমান বলেন, ‘৩০/৩৫ বছর ধরে মোরা খালের পাড়-ঝাড়, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হরিদ্রাবাড়িয়া ও কলাগাছিয়ার মানুষ চলাফেরা করতাম। মোগো এলাকায় কোনো রাস্তা ছিলনা। এ বছর চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি মোগো গ্রামের গনি হালাদারের বাড়ী থেকে খালেক হালাদারের বাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তা কইরা দেছে। এইরাস্তা হওয়ায় আমরা অনেক খুশি’।
প্রকল্প সভাপতি ও ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাসুদ বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর ৩ নং ওয়ার্ডের এ রাস্তাটিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করিয়েছি।
গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে কোনোভাবে দুর্নীতি করার সুযোগ নাই। সরকারী বিধান মোতাবেক সম্পূর্ন কাজ (ইজিপিপি) প্রকল্পের নীতিমালা অনুসারে সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তাবায়নের জন্য নিয়মিত তদারকি করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available