মো. ওসমান গনি ইলি (ঈদগাঁও) কক্সবাজার প্রতিনিধি: নবসৃষ্ট কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার সদর দপ্তর ইসলামাবাদ ইউনিয়নে স্থাপনের সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ঈদগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম ও অন্যান্য কর্তৃক দায়েরকৃত রীট আবেদনটি হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন।
নিকারের ১১৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১০/০৮/২০২১ তারিখ কক্সবাজার সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন যথাক্রমে ঈদগাঁও ইউনিয়ন, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন, জালালাবাদ ইউনিয়ন, ইসলামপুর ইউনিয়ন এবং পোকখালী ইউনিয়নের সমন্বয়ে ঈদগাঁও উপজেলা গঠিত হয়।
পরবর্তীতে নিকারের সিদ্ধান্ত এবং নতুন উপজেলা, থানা এবং তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের সংশোধিত নীতিমালা ২০০৪-এ উল্লেখিত শর্তাবলি মেনে জেলা স্থান নির্বাচন কমিটি কর্তৃক সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ঈদগাঁও মৌজায় অবস্থিত প্রস্তাবিত স্থানটিকে ঈদগাঁও উপজেলা সদর দপ্তর স্থাপনের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।
জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত ০২/১১/২০২১ তারিখের পত্রযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সদর দপ্তর স্থাপনের জন্য নির্ধারিত স্থানে ৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দেন। কিন্তু এটাকে চ্যালেঞ্জ করে ঈদগাঁও উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম ও আরও কয়েকজন মিলে হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের করেন।
প্রাথমিক শুনানী শেষে হাইকোর্ট গত ০২/১১/২০২১ তারিখে প্রশাসনিক অনুমোদনের উপর স্থগিতাদেশ দিলেও পরবর্তীতে সরকার পক্ষের আবেদনক্রমে আপীল বিভাগ তাতে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। হাইকোর্টকে রুল শুনানী অন্তে দ্রুত নিষ্পত্তির আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানী শেষে ১ জুন উপরোক্ত রীট আবেদনটি খারিজ করে এবং পূর্বের ইস্যু করা রুলের নিষ্পত্তি করে দেন।
সরকার পক্ষের পাশাপাশি ঈদগাঁও উপজেলা বাসির পক্ষে রীট আবেদনে আদালতের অনুমতি নিয়ে সংযুক্ত বিবাদী (added repondent) হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রীট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোর্শেদ।
অন্যদিকে ঈদগাঁও উপজেলা বাসির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। তাঁকে সহায়তা করেন এডভোকেট হুমায়ুন কবির আহসান, ব্যারিস্টার সাব্বির আজম এবং এডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মো. আশরাফুল আলম নোবেল।
দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এ রায় ঘোষণার পর নবসৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সদর দপ্তর স্থাপন নিয়ে নিরর্থক বিরোধ উপজেলা গঠন সংক্রান্ত সমস্ত কর্মকাণ্ড স্থবির করে দিয়েছে। এমন কি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন গুলোর নির্বাচন ও করা যাচ্ছে না।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, হাইকোর্ট দু'পক্ষকে সূদীর্ঘ ও বিস্তারিত শুনানীর সুযোগ দিয়েছেন। বিদ্যমান আইন, নিকার এর সিদ্ধান্তের আলোকে রীট আবেদনটি রক্ষনীয় নয় এই মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এ রায়ের ফলে ঈদগাঁও উপজেলা সদর দপ্তর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে স্থাপন করতে আর কোনও আইনী বাধা নেই।
প্রতিপক্ষের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোর্শেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে।
সরকার পক্ষের আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল বলেন, এ রায়ে প্রমাণ হল যে, স্থান নির্বাচনে সরকার কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। স্থানীয় জনগণের প্রত্যাশা বৃহত্তর স্বার্থে কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি বন্ধ করে ঈদগাঁও উপজেলা সদর দপ্তর স্থাপনের বাকি কর্মকাণ্ড আবার পুরোদমে শুরু করা হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আশা করেন নির্ধারিত স্থানে ঈদগাঁও উপজেলা সদর দপ্তর স্থাপনের কাজ অনতি বিলম্বে শুরু করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available