রাজীব মুন্সী, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগাছায় অপরিকল্পিতভাবে আলাইকুঁড়ি খাল পুন:খননের কারণে ভেঙে পড়েছে প্রায় ৬০ বছরের পুরনো একটি ব্রিজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে ব্রীজটি ভেঙ্গেছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, খননের উদ্দেশ্যে বৃষ্টির পানি একপাশে আটকে রাখা হয়েছিলো। পরে পানির স্রোত বৃদ্ধি পেলে বাধ কেটে দিতে বাধ্য হয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। এ সময় ব্রীজের নিচে স্রোতের তোড়ে পাটাতনের মাটি সড়ে গিয়ে ২৮ মে রোববার রাত ৯ টায় ব্রীজটি ভেঙ্গে যায় । ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রংপুর-পাওটানা রোডের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ ঘটনায় বিপদে পড়েছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও কেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। এতে নদীর দুপাশের লোকজন হঠাৎ করে দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দুপাশের কয়েক হাজার পরিবার ।
স্থানীয়রা জানায়, বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ ইআইআরপি প্রকল্পের মাধ্যমে আলাইকুঁড়ি নদী অপরিকল্পিতভাবে খননের উগ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন স্পটে পানি আটকাতে বাঁধ নির্মাণ করে। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উজানের পানির তোড়ে বাধ্য হয়ে বাধ কেটে দেয় বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এ ভাবে একসঙ্গে সবগুলো বাঁধ কেটে দেওয়ায় পানির তীব্র স্রোতে ব্রিজটি ভেঙে যায়। ব্রিজ ভাঙায় কোন জানমালের ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, রংপুর-পাওটানাহাট রাস্তায় ১৯৬৩ সালে ইটাকুমারী ও পারুল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দামুরচাকলা বাজারের পশ্চিমপাশ লাগোয়া ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে এটির উপরের অংশ সংস্কার করা হয়। ব্রিজের উপর দিয়ে ওভারলোডের গাড়ি চলাচল এবং অপরিকল্পিত নদী খননের কারনেই ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিক মিয়া ও সাদ্দাম হোসেনের সাথে। তার বলেন, নদীটি খনন করার পরে স্রোতের কারণে ব্রিজটি ভেঙে যায়। এখন ঢাকা থেকে পাওটানাহাট পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি হাটবাজার করতে সমস্যা হচ্ছে স্থানীয়দের। খনন কাজের ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ার কারনে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে নি।
স্থানীয় সংবাদ কর্মী সৈয়দ আলী বলনে, ব্রিজটি ভাঙার ফলে অফিসে যাতায়াত করতে অনেক দুর পথ হেঁটে যেতে হচ্ছে। অনেকে কলাগাছের ভেলা দিয়ে কষ্টকরে পারাপার হচ্ছেন। শিক্ষার্থীর তাদের যাতায়াতে পড়েছেন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, ঘটনাটি বিএমডিয়ের দায়িত্বহীনতার কারণে ঘটেছে, আমি এর ব্যাখ্যা চেয়েছি। বর্তমানে চলাচলে বিঘ্নের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে জরুরি ভিত্তিতে ব্রিজটি পুন:নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
খাল খননের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও পীরগাছা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল হক লিটনকে এ ঘটনায় জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, নতুন ব্রীজের টেন্ডার হয়েছে তারাতারি কাজ শুরু হবে।
অনেকে আবার এ ঘটনায় বলতে শোনা গেছে এটা পরিকল্পিতভাবে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনায় ফোন করা হয় বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রংপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমানকে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available