সুমন আহমেদ, মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরে প্রায় ২ যুগ ধরে শিল্পী আক্তার (৩৪) নামে এক প্রতিবন্ধীকে শেকল দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। দিনের বেলা বাসার সামনে গাছের সাথে আর রাতে ঘরের চৌকির সাথে বেধে রাখা হয় তাকে। মতলব উত্তর উপজেলার ফতেহপুর পূর্ব ইউনিয়নের উত্তর লধুয়া গ্রামের মৃত জেহর আলীর মেয়ে শিল্পী।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির পাশের একটি গাছের সঙ্গে বেধেঁ রাখা হয়েছে শিল্পীকে। তার বাবা-মা কেউ বেচে নেই। ৪ ভাই ২ বোনের সংসারে সবাই আলাদা হয়ে গেলে শিল্পীর ঠাই হয় বড় ভাই লিটনের কাছে । খেটে খাওয়া লিটনের পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় । সেখানে প্রতিবন্দী বোনকে নিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।
লিটন এশিয়ান টিভি অনলাইনকে জানান, জন্মের পর হঠাৎ আমার বোন শিল্পী অসিুস্থ হয়ে পরে এবং প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। আমার বাবা জীবিত থাকাকালীন স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক ও কবিরাজ দিয়ে ওকে চিকিৎসা কিরিয়েছেন। কিন্তু তাতে শিল্পী সুস্থ হয়নি। ক্রমেই ওর মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। আমি তো গরিব, দুবেলা খেতেই তো আমার কষ্ট হয়। কি করে বোনের চিকিৎসা করাবো। এখনতো ও সুযোগ পেলে এদিক-সেদিক চলে যায়। তাই বাধ্য হয়ে ওকে আটকে রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, সংসারে উপর্জনক্ষম ব্যক্তি আমি একাই। অন্য ভাইয়েরা সবাই যে যার মতো আলাদা হয়ে গেছে। আমার প্রতিবন্ধী বোনটাকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি ভাই। সরকার থেকে যদি ওর চিকিৎসা আর সাহায্য করা হতো তাহলে আমার মত গরিবদের জন্য একটু সহজ হতো।
কোন সাহায্য পান কি না এমন প্রশ্ন করা হলে লিটন জানান, ওকে একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে কিছু টাকা পাই । কিন্তু সে টাকা দিয়ে তো আর ওর চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। ভরনপোষন হচ্ছে না।
সরকার থেকে বা সমাজের সচ্ছল কেউ যদি শিল্পীর চিকিৎসায় সহায়তা করে তবে আমরা সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
কথা হয় লিটনের প্রতিবেশীদের সাথে। প্রতিবেশিরা বলেন, শিল্পীর বাবা মা কেউ বেঁচে নেই। সে অসহায় এবং প্রতিবন্ধী। অর্থের অভাবে ঠিকভাবে তার চিকিৎসাও করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available