পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীতে চাঁদা না দেয়ায় বখাটের ছোড়া পেট্রোলের আগুনে ঝলসে গেছে জাহাঙ্গির হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির শরীর। ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের ফটিকের খেয়াঘাট এলাকার সিকদার আবাসিক হেটেলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর ফটিকের খেয়াঘাট এলাকায় সিকদার আবাসিক হেটেলে আসেন অভিযুক্ত শাকিল । পরে হোটেলের ম্যানেজার জাহাঙ্গীরের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শাকিল ম্যানেজার জাহাঙ্গীরের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পালিয়ে যায় শাকিল।
পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় দগ্ধ জাহাঙ্গীর হোসেনকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান জাহাঙ্গীরের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জাহাঙ্গীরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, পেট্রোল নিক্ষেপকারী বখাটে শাকিল পটুয়াখালী ফটিকের খেয়াঘাট এলাকার শাহিন গাজীর ছেলে। সে এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং ছিনতাইকারী। এর আগেও কয়েকজনের কাছথেকে চাঁদা আদায় ও ছিনতাই করেছে সে।
পটুয়াখালীর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, জাহাঙ্গীরকে সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হোটেল বয় মোতাহার হেসেন বলেন, শাকিল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হোটেল থেকে চাঁদা নিতো। ঘটনার দিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬ টায় আমাদের হোটেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীরের কাছে চাঁদা দাবি করে। এ সময় জাহাঙ্গীর বাড়ি যাবার কথা বলে শাকিলকে পরে আসার জন্য বুঝিয়ে বলে। কিন্তু কোন কিছু না শুনেই শাকিল উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যয়ে সে হেটেল থেকে বেড়িয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্য়েই একটি বোতল ভর্তি করে পেট্রোল হাতে নিয়ে ফিরে আসে। এ সময় কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই ম্যানেজার জাহাঙ্গীরের শরীরে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
কথা হয় সিকদার আবাসিক হেটেলের মালিক মো. মাসুমের সাথে। তিনি বলেন, আমার হোটেলে যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে আমি তাদের কাউকে ছাড় দেবো না। এখন রোগীর সাথে ঢাকায় আছি তাই মামলা করতে আমার কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। শীঘ্রই আমি পটুয়াখালী এসে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবো।
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি এ ব্যাপারে শুনেছি। ঘটনার সত্যতাও পাওয়া গেছে। কিন্তু এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি বা কোর্টে মামলাও করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available