নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার পূর্বধলায় ৩ স্কুল ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে উঠেছে। উপজেলার ফাজিলপুর বাজারে অবস্থিত বাবিয়া মাহমুদ মডেল স্কুলের পরিচালক ও শিক্ষক আনিছুর রহমান কালামের (৪৫) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া যায়। ৫ মে সোমবার দুপুরে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত এ কে এম আনিছুর রহমান কালাম উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে।
জানা যায়, স্কুলটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ৩ ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্থা করে আসছিলেন স্কুলটির পরিচালক কালাম। এদের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী (১০) কালামের স্ত্রীর ভাইয়ের মেয়ে। মেয়েটির বাবা না থাকায় এবং মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে কালামের স্ত্রীর (ফুপু) কাছে থেকে তার স্কুলেই পরালেখা করছিলো। ভুক্তভোগী অন্য শিশুরাও হটাৎ স্কুলে যেতে না চাওয়ায় তাদের অবিভাবকরা কারণ জিজ্ঞাস করলে এ চাঞ্চল্যকর খবর ফাঁস হয়।
এ ঘটনায় উত্তেজিন লোকজন আটক করে কালামকে। পরে গড়োয়াকান্দা গ্রামের জুলহাস ও স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন বিচার সালিশের মাধ্যমে মিমাংসার কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় কালামকে। এক পর্যায়ে অভিযোগ করা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান এবং খলিশাউড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকারের কাছে। এ সময় তাকে বিচারের জন্য ডাকা হলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে আসি-আসছি বলে কালক্ষেপন করে পরে আর আসেনি। ৫ মে সোমবার এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে গা ঢাকা দেয় কালাম।
এ সময় চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকার ও স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এতিম শিশুটিকে উদ্ধার করে তার দাদির জিম্মায় দেয়া হয়। তার আগে ভুক্তভোগী ৩ শিশুকে যৌন হেনস্থার ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে তারা কান্নায় ভেঙে পরেন। শিশুদের অবিভাবকদের উপস্থিতিতে তখন একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকার বলেন, ঘটনাটি শোনার পর শিশুদের পরিবার, কালাম এবং তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। স্কুলের পরিচালক কালাম আসছি-আসবো বলে সময় নষ্ট করে পরে আর আসেনি। ঘটনাটি নিবির পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে এবং রাবিয়া মাহমুদ মডেল স্কুলের পরিচালক একেএম আনিছুর রহমান কালামের বক্তব্য নিতে তাকে ফোন করা হয়। ফোনে বারবার রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যৌন হেনস্থার ঘটনা কেউ আমাকে জানায়নি। তবে ঘটনাটি শোনার পর আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। শিশুদের পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিক কোন অভিযোগ করা হলে আমরা আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুদের পরিবারকে নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সকল আইনগত সহায়তা দেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available