আসাদ গাজী, ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: শরীয়তপুরে ২ সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বইছে। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। অসহনীয় এ গরম থেকে রক্ষায় শরীয়তপুরে চার্জার ফ্যানের কদর বেড়েছে। কিন্তু বাড়তি দাম আর বাজারে অপ্রতুলতার কারণে অনেকেই ঘরে থাকা নষ্ট চার্জার ফ্যান মেরামতের করে নিচ্ছেন। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফ্যান মেরামতের কাজে নিয়োজিত টেকনিশিয়ানরা।
কথা হয় উপজেলার ভেদরগঞ্জ বাজারে নজরুল ইলেকট্রনিকের সত্ত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আমার দোকানে ১০০-২০০ টি নষ্ট ফ্যান পড়ে আছে। প্রতিদিন গড়ে ৮০ টি ফ্যান ঠিক করে রাত ১১ টায় বাড়ি যাই। তীব্র গরমের আগে দৈনিক ১০-১২ জনের বেশি কাস্টমার পাওয়া যেতো না। কিন্তু তীব্র গরম এবং বাজারে নতুন চার্জার ফ্যানের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ার কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে পুরাতন ফ্যান ঠিক করছে। তবে পুরাতন ফ্যান ঠিক করতেও ক্রেতাকে এখন বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে, কারণ বাজারে এখন ফ্যানের পার্টসের দামও অনেক বেশি। কাজের চাপ বেশি থাকায় দুপুরে ঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করতে পারি না। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের যে অবস্থা, দোকানে কাজ করেও শান্তি পাচ্ছি না।
কথা হয় পাইকারি ফ্যান বিক্রেতা শরীয়তপুর সদর উপজেলার জামাল ইলেকট্রনিক্সের মালিক জামাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আমার দোকানে নতুন কিছু চার্জার ফ্যান আছে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই চাইলেও কিনতে পারছেন না। আমাদেরও বেশি দামে ফ্যান কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া ফ্যানের স্টকও নেই।
ভেদরগঞ্জ বাজারের নূর ইলেকট্রনিকের মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমি ৭ জুন বুধবার ঢাকা থেকে কয়েকটি ফ্যান এনেছি। গত সপ্তার তুলনায় প্রত্যেকটি ফ্যানের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি। তাই বাজারে ফ্যানের চাহিদা বেশি থাকলেও অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকেই চাইলেও চার্জার ফ্যান কিনতে পারছেন না। আমি মাত্র ১০ টি ফ্যান কিনতে পেরেছি। কারণ স্টকে ফ্যান না থাকায় চাহিদা মতো আমাদের কাছে বিক্রি করতে পারছে না ফ্যান কোম্পানিগুলো।
এশিয়ান টিভি অনলাইনের সাথে কথা হয় ফ্যান ঠিক করতে আসা জাকির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আমি একটি চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছিলাম, কিন্তু দেখি দাম চাচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এতো টাকা আমার কাছে নেই তাই বাড়িতে পরে থাকা তিনটা পুরনো, নষ্ট চার্জার ফ্যান ঠিক করতে নিয়ে এসেছি। দোকানে এসে দেখি অনেক ভিড়। দোকানদার আমাকে দু-একদিন পর আসতে বলেছে। এদিকে বাড়িতে লোডশেডিংয়ের সমস্যায় পরিবারের সবাই খুবই অতিষ্ঠ। নতুন ফ্যানের দাম বেশি হওয়ায় পুরোনোগুলো ঠিক করে নেয়াই আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে।
শরীয়তপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সুজন কাজী বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান করে যাচ্ছি। যদি কেউ ফ্যান বেশি দামে বিক্রি করে, তবে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে তাকে । আমরা বিভিন্ন সূত্রে বাজারে চার্জার ফ্যান বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ পেয়েছি। শীঘ্রই আমরা আবারও অভিযানে নামবো এবং যারা বেশি দামে ফ্যান বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে এখন প্রকারভেদে একেকটি চার্জার ফ্যানের দাম পড়ছে পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে দশ হাজার টাকা। তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে তাই অনেকেই সামর্থের মধ্যে পুরাতন চার্জার ফ্যান ঠিক করে নিচ্ছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available