দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টি, প্রচণ্ড রোদের ফলে সৃষ্ট দাবদাহ এবং রোগ-বালাইয়ের কারণে মৌসুমি ফল লিচুর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার উৎপাদনও কম হয়েছে কম। ফলে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মৌসুমি এই ফল। দাম শুনেই লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন অনেক ক্রেতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজার থেকে শুরু করে হাট-বাজার, ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে এমনকি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে করে বিক্রি করা হচ্ছে লিচু। কয়েকদিনের তুলনায় বাজারগুলোতে মৌসুমি ফল লিচুর আমদানি বেড়েছে। কিন্তু বাজারে প্রচুর পরিমাণে লিচুর সরবরাহ থাকলেও দাম এখনও অনেকটাই চড়া। অনেকেই শুধু দাম শুনে লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
এবারে লিচু দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের সংখ্যা তুলনামূলক কম। বিক্রিও আশানুরূপ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। একদিন বিক্রি বাড়লে, আরেকদিন খুবই কম বিক্রি হয়। এভাবেই চলছে লিচুর বাজার।
লিচু ক্রেতারা জানান, লিচু এখন সৌখিন ফলে পরিণত হয়েছে। ১০০টি লিচু ৩২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতো দাম দিয়ে এই লিচু একবারের জায়গায় দুইবার আর কেনা হয় না।
বীরগঞ্জ পৌরশহরের তাজ মহল সিনেমা হলের সামনে এবং বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লিচুর দোকানে বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক। সেখানে ১০০টি লিচু (প্রকার ভেদে) ২৫০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একটু বড় সাইজের লিচু ৪০০ টাকা করে এবং অন্যান্যগুলো ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা হাশেম আলীও সুরুজ আলী জানান, স্থানভেদে বিক্রি লিচু কম-বেশি হয়ে থাকে।
লিচু বিক্রেতা মো.লিয়ন শেখ বলেন, সপ্তাহের তিন-চার দিন ভালো বিক্রি হয়। তখন দৈনিক ১০ থেকে ১২ হাজার লিচু বিক্রি হয়। আবার অন্যান্য দিন ৪-৫ হাজার বিক্রি করতেই কষ্ট হয়ে যায়। এ বছর লিচুর দাম একটু বেশি। তারপরে আবার গতবারের তুলনায় এ বছর বিক্রির পরিমাণ কম। শুধু দরদাম করেই অনেকে চলে যাচ্ছেন। মাদ্রাজি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, হারিয়া লিচু ৪০০ থেকে ৪৫০, বেদানা লিচু ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে উঠেছে চায়না ৩ লিচুও, যা একশো বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০৫০ টাকা পর্যন্ত।
কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের বাগান মালিক মো.সাদেকুল হক মিলন জানান, অনাবৃষ্টি আর চলমান দাবদাহের প্রবাহে অতিরিক্ত গরম ও পশ্চিমা উষ্ণ বাতাসে ঝলসে যাচ্ছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলার গাছের পাকা লিচু। লিচুর গায়ে পোড়া দাগ পড়ছে এবং ফেটে যাচ্ছে। অনাবৃষ্টির কারণে এবছর লিচুর আকার বা সাইজ ছোট হয়েছে। এ অবস্থায় গাছে লিচু রাখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বাজারেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাচ্ছেন না বাগানি ও ব্যবসায়ীরা। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন অনেক লিজ নেয়া বাগানি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available