আইয়ুব খান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: বছরের চৈত্র থেকে আষাঢ়, এ ৪ মাস বাগদা চিংড়ির রেণুপোনার মৌসুম। এ সময়ে প্রাকৃতিকভাবেই নদীতে বাগদা চিংড়ির পোনা উৎপন্ন হয় ।
চাহিদা থাকায় এ সময় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিশেষকরে রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি, বড়বাইশদিয়া, ছোটবাইশদিয়া এবং চরমোন্তাজের বিভিন্ন পয়েন্টে শত শত জেলে নিষিদ্ধ মশারি জাল দিয়ে নদীতে চিংড়ির রেণু পোনা আহরণ করে। ফলে একইসাথে ধ্বংষ হচ্ছে অন্যা প্রজাতির রেণু ও মাছের ডিম।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি বাগদা রেণু পোনা আহরণের জন্য কয়েক হাজার অন্য প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বাগদার রেণু পোনা মহাজনদের কাছে বিক্রি করছে শতক হিসেবে, কিন্তু মহাজনরা একই পোনা বিক্রি করছে পিচ হিসেবে।
কথা হয় বাগদা রেণু পোনা শিকারের কাঝে জড়িত মো. শাহজাহান মিয়ার সাথে। তিনি জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় এবং সরকারি সাহায্য না পাওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়েই পেটের দায়ে বেছে নিয়েছেন এ পেশা।
এশিয়ান টিভি অনলাইনের সাথে কথা বলেন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের রেণু শিকারি মো. রাসেল মিয়া। তিনি বলেন, অভাবের তাড়নায় জীবন-জীবিকার তাগিদে অবৈধ জেনেও তিনি রেণু পোনা শিকার করছেন। প্রতিদিন তিনি ৮০০ থেকে এক হাজার পোনা শিকার করতে পারেন। বছড়ের এ সময়টায় বাজারে রেনু পোনা বিক্রি করেই তার সংসার চলে।
এদিকে জেলেদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আগে প্রতিটি চিংড়ি পোনা স্থানীয় বাজারে এক একটি রেণু এক টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার তা বিক্রি হচ্ছে শতক ৩০ টাকা দরে। এ জন্য মহাজনদের সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন তারা।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের এম আজাদ খান সাথী জানান, প্রশাসনের যোগসাজশে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জেলেদের দাদন দিয়ে অবাধে রেণু পোনা নিধন করছে। এতে করে বিলুপ্ত হতে চলেছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতীর মাছের পোনা। রেণু আহরণ বন্ধ করা না গেলে এক সময় বিলুপ্ত হবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এতে উৎপাদন কমবে নদী ও সামুদ্রিক মাছের।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বাবুল জানান, উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে এখনও চিংড়ির রেণু পোনা ধরতে দেখা যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। কোস্টগার্ড এবং নৌ-পুলিশ বিভিন্ন সময় আমাদের সাথে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে রেণু পোনা আহরণ রোধে আমাদের এ অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available