কুয়াকাটা প্রতিনিধি: ধুলাসারের হেমায়েত মুন্সি (ছদ্মনাম) জন্মের পর থেকেই তাদের যোগাযোগের রাস্তাটি দেখছেন কাঁচা । দেখতে দেখতে তার বয়স ৫৩ বছর হয়েছে, কিন্তু ধুলাসার-ডাবলুগঞ্জের রাস্তাটি এখনও পাকা হলো না। এশিয়ান টিভি অনলাইন প্রতিনিধির কাছে আক্ষেপ করে বললেন, ‘এই কাঁচা রাস্তা দেইখাই হয়তো আমার মৃত্যু হবে। পাকা রাস্তা আর দেইখা যাইতে পারমু না’।
কথা হয় স্থানীয় কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, জনপ্রতিনিধিরা শুধু বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেয়নি। পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার-ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ১৩ কি. মি. সড়কটি দেশ স্বাধীনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কাঁচা অবস্থাতেই আছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিনিয়ত স্থানীয়দের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধুলাসার-ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের সংযোগস্থল অনন্তপাড়া খাপড়াভাঙ্গা ব্রিজ থেকে মহিপুর থানা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকা না করায় জনদুর্ভোগ এখন চরমে। এ সড়কে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে হাটু সমান কাদা ভেঙে। বর্ষায় এমন কর্দমাক্ত রাস্তা পুরোপুরি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে যায়। ফলে ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, মানুষ পায়ে হেঁটে চলতেও চরম দূর্ভোগে পরে। এ সড়কেই উপজেলার সাথে সুরডুগী, তারিকাটা, মনসাতলী ও সেরাজপুরের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে। বিকল্প অন্য রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে স্থানীয়দের কাদা-পানি মাড়িয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে।
মহিপুর থানা, কুয়াকাটা হাসপাতাল, কলাপাড়া উপজেলাসহ উপজেলার সকল কার্যক্রমে এই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া অফিস আদালত, বাংক, সরকারি ও জরুরি সেবা, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সকল নুন্যতম সেবা থেকে বঞ্চিত এখানকার বাসিন্দারা। ভোগান্তিতে গ্রামীণ হাটবাজারের ব্যবসায়ীরাও রাস্তায় কাঁদা থাকায় সাপ্তাহিক বাজারসহ দোকানপাটে চাইলেই আসতে পারছেন না।
দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা পানিতে রাস্তাটি একাকার অবস্থা হয়েছে। সড়কের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের। এসব গর্তে পানি জমে রাস্তায় কাদা হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। সড়কটি পাঁকা হলে একদিকে যেমন গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয়দের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে মুমূর্ষু রোগী পরিবহণে সমস্যা হবে না। ভ্যান, অটোরিকশা সহজেই চলতে পারবে। ফলে কৃষক তার ধান ও অন্যান্য ফসল চাইলেই বাজারে বিক্রি করতে পারবে।
কথা হয় স্থানীয় সাংসদ সদস্য আলহাজ্ব মহিব্বুর রহমান মহিবের সাথে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলার বেশ কয়েকটি রাস্তার জন্য কাগজপত্র অফিসে পাঠিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুত এ রাস্তাগুলো মানুষ চলাচলের উপযোগী হবে। সরকারের কোটি টাকার উন্নয়ন করলেও এ কাঁদামাখা রাস্তার জন্য এগুলো কোন কাজেই আসছে না। তাই এবার গুরুত্বসহকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available