গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা: গুরুদাসপুরের গোপিনাথপুর এন ইউ এস দাখিল মাদরাসায় নৈশ্যপ্রহরী পদের নিয়োগ আটকাতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১৬ জুন শুক্রবার সকাল দশটার দিকে মাদরাসা চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, শূন্য পদে একজন নৈশ্যপ্রহরী নিয়োগে ২৫ জানুয়ারি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এ পদে স্থানীয় গোপিনাথপুর গ্রামের রমিজুল ইসলালাম রান্টু, মো. বকুল হোসেন, মিজানুর রহমান ও সৌরভ হোসেন নামের ৪ প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৫ সদস্যের নিয়োগ বোর্ড ১৬ জুন শুক্রবার বেলা ১১ টায় পূর্ব নির্ধারিত তারিখে প্রার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম, ডিজি প্রতিনিধি ওমর ফারুক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার, সদস্য সচিব সুপার আব্দুল কুদ্দুস ও শিক্ষক প্রতিনিধি সাহিদা খাতুন। তাদের উপস্থিতিতে মাদরাসার একটি কক্ষে পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছিলো। এ সময় হটাৎ করেই নাজিরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু লোকজন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন এবং পরীক্ষার্থীদের খাতা ছিনিয়ে নেন। এতে বাধা দিলে লাবুর লোকজন নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং তাদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
জানা যায়, হামলার শিকার হয়েছেন গুরুদাসপুর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার, ডিজি প্রতিনিধি মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ওমর ফারুক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম (৫০)। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় নজরুল ইসলামকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জানান, আহত নজরুল ইসলামের মাথার ডান পাশে ৩ সে.মি. এবং বাম হাতের একটি আঙ্গুলের মাথা কেটে গেছে। এ ছাড়া বাম কানের নিচেও কেটে গেছে। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলে যাওয়ার চিহৃ রয়েছে।
কথা হয় অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবুর সাথে। তিনি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শুক্রবার আমার স্ত্রীর জানাজা ছিলো। আমি স্ত্রীর মৃত্যুতে এমনিতেই শোকাহত, হামলা করবো কখন। আমাকে রাজনৈতিকভাবে ফাসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
গুরুদাসপুর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার জানান, নিয়ম মেনেই ঐ মাদ্রাসার নৈশ্যপ্রহরী নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই পরীক্ষাচলাকালীন অতর্কিতভাবে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের ওপর হামলা করা হয়।
নিয়োগ বোর্ডের ডিজি প্রতিনিধি মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের হিসাব সহকারি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় ২০ মিনিট পরীক্ষা হওয়ার পর ১০/১৫ জন হলে ঢুকে পরীক্ষা বন্ধ করতে বলে। এক পর্যায়ে পরীক্ষা বন্ধও করা হয়। কিন্তু তারপরও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের আটকে রেখে মারধর করেন হামলাকারীরা।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর পরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ সময় কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available