ফিরোজ হোসেন, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: আর কয়েকদিন পর ঈদুল আজহা। এরই মাঝে রাজধানীর নবাবগঞ্জ এলাকায় বেড়ে গেছে অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা। পাশাপাশি গ্রামে ছোটখাটো চুরি। তবে নবাবগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা বেড়ে গেছে। এতে কেউ গ্রাম থেকে নবাবগঞ্জ সদরে ব্যাংক বীমা বা যে কোনও জরুরি কাজে আসলেই এদের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছেন, তবুও চক্রটি বেপরোয়া।
এরই মধ্যে গেল সপ্তাহে নবাবগঞ্জের বিভিন্ন বেশ কয়েকটি স্পটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বনাশ হয়েছে বেশ কয়েকজন। হারাতে হয়ে সাথে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার। অজ্ঞান পার্টির এই চক্রটি টার্গেট করে ব্যাংকে কেউ টাকা তুলতে যাওয়ার সময় বা টাকা রাখতে যাওয়ার সময়টি। টার্গেট করেই ভুক্তভোগী ঐসব ব্যক্তিদের সব হাতিয়ে নিচ্ছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, নবাবগঞ্জে গত সপ্তাহে সোনালী ব্যাংকের নিয়ে দুই ব্যক্তি টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান সড়কে গেলেই ব্যাগে থাকা টাকা উধাও হয়ে যায়৷ তবে এরমধ্যে এক নারীকে স্পে দিয়ে অজ্ঞান করলে জ্ঞান হাটিয়ে ফেলে৷ পরে জ্ঞান ফিরলে ব্যাগে থাকা টাকা আর ফিরে পান নি৷
এছাড়া গেল সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ইসলামি ব্যাংক নবাবগঞ্জ শাখা থেকে টাকা তুলে ব্যাগে নিয়ে বের হন এক নারী। বের হওয়া মাত্রই এতিমখানার কাছাকাছি গেলে এক ব্যক্তি প্রথমে মুখে স্পে করে দেন৷ ঘটনাস্থলেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তার স্বজনরা জানতে পেরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন৷ ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসার মধ্য দিয়ে জ্ঞান ফিরে আসে। তার কাছ থেকেও ব্যাংক থেকে উঠানো ৫৩ হাজার টাকা নিয়ে যায় এই অজ্ঞান পার্টির চক্রটি।
এই চক্রটি বেশ বড় বলে ধারনা হচ্ছে। তবে, ঈদ যেমন ঘনিয়ে আসছে ঠিক এই টাকা স্বর্ণ ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির চক্রটি নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে৷ আরও ধারণা করা হচ্ছে এসব অজ্ঞান পার্টি বা ছিনতাইকারী ঈদকে সামনে রেখে তৎপর থাকে। এরা বেশিরভাগই বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ব্যক্তিদের অজ্ঞান করে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে নারী সদস্য বেশি বলে জানা যায়৷ গেলও বছরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেওয়ার ভীড় থেকে এক নারীর গলা থেকে চেইন ছিনতাই করার সময় হাতেনাতে ধরলে গণপিটুনি দেওয়া হয়৷
শুধু ব্যাংক থেকে উঠানো টাকাই নয়৷ গত সপ্তাহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভীতর রোগীদের সিরিয়ালের ভীড়ে এক নারীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইনে নিয়ে যায় এই চক্রটি। ডাক্তার দেখানোর পর গলায় চেন না পেয়ে কোনও সন্ধ্যান পাননি এই চেইনের। তবে ঐ ভুক্তভোগীর দাবি ভীড়ে কিছু লোক ধাক্কা দেয়, ঐ সময়ই চেইনটি ছিনতাই হয়েছে।
এদিকে সোনালী ব্যাংক নবাবগঞ্জ শাখা ম্যানেজার মফিজুর রহমান এশিয়ান টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, ব্যাংকের বাহিরে গত সপ্তাহে এরকম কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। থানাকেও অবগত করেছি। পরবর্তীতে গ্রাহকদের বিশেষ নিরাপত্তা দিতে ব্যাংকের নিচে গলিতে দুজন আনসার সদস্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টাকা উঠাতে আসা প্রতিটি গ্রাহকদের বলা হচ্ছে নিরাপদ ও সচেতন অবলম্বন করে টাকা নিয়ে বাসায় যাবেন৷
এ বিষয়ে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম এশিয়ান টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, ঘটনাগুলো জানতে পেরেছি। তবে, ঈদকে সামনে রেখে পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করছেন৷ তিনি আরও বলেন, জনগণ যেন ব্যাংক বীমায় টাকা লেনদেন বা হাটবাজারে সুন্দর ও নিরাপদে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য নবাবগঞ্জ ও দোহারে সাদা পোষাকে পুলিশের মোবাইল টিম ও হোন্ডা টিম ২৪ ঘন্টা ডিউটি করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি বিশেষ-বিশেষ স্থানগুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট ও টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এএসপি আরও বলেন, চুরি-ছিনতাই বা অজ্ঞান ও মলম পার্টি থেকে প্রতিকার পেতে আইশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের দেওয়া নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণকে আরো সচেতন হতে৷
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available