যশোর প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর গ্রামের গৃহবধূ রাজিয়া খাতুনের চোখ এসিড দিয়ে নষ্ট করার দায়ে স্বামী কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত।
২৫ জুন রোববার এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত কামরুজ্জামান বাঙ্গীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী।
জানা গেছে, এসএসসি পাশ করার পর কামরুজ্জামানের সাথে রাজিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রাজিয়া স্বামীর সংসার করা অবস্থায় যশোর এমএম কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। এরপর তিনি বিসিএস এবং নিবন্ধনের জন্য ঢাকায় কোচিং করতে যান। ঢাকা শহরের স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার চালানো ব্যয়বহুল হওয়ায় স্বামী-সন্তানকে তার পিতার বাড়ি কাশিপুর গ্রামের রেখে যান। মাঝে মধ্যে তিনি বাড়িতে আসতেন। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি রাজিয়া খাতুন স্বামী-সন্তান নিয়ে পিতার বাড়ি ছিলেন। এ দিন ভোর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রাজিয়া খাতুনের চোখে আসামি কামরুজ্জামান চোখের ওষুধের পাত্রে (ড্রপে) রাখা এসিড দিয়ে দেয়। এ সময় রাজিয়ার চিৎকারে স্বজনরা ঘুম থেকে উঠে দ্রুত তার রুমের সামনে এসে দেখে কামরুজ্জামান পালিয়ে যাচ্ছে। বিছানা উপর পড়ে আছে ওষুধের ড্রপ। বিষয়টি দেখে সকলের সন্দেহ হয়। ওষুধের ড্রাপ থেকে দুই ফোঁটা মাটিতে ফেলে নিশ্চিত তারা নিশ্চিত হয় যে, এর মধ্যে এসিড ছিলো। রাজিয়া খাতুনকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পরে ঢাকায় নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রাজিয়া খাতুনের ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে কামরুজ্জামানকে আসামি করে এসিড অপরাধ দমন আইনে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় প্রমাণসহ কামরুজ্জামানকে অভিযুক্ত করে তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই তোবারেক আলী ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
সকল সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available