মো.ফারুক আহম্মেদ মোল্লা, শরীয়তপুর প্রতিনিধি: ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-শরীয়তপুরসহ জেলার অধিকাংশ সড়কে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা-শরীয়তপুর সহ অন্যান্য সড়কে বাসগুলোতে সিটিং ও লোকাল বাসে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য করছে বাস শ্রমিকরা । অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করা হয় বলেও অভিযোগ যাত্রীদের। এ বিষয়ে অনেক ভুক্তভোগী জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কয়েকজন চালক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন। তবে একমুখো যাত্রী থাকার কারণে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে যুক্তি দ্বার করাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, গত দুই দিন আগে থেকে ঢাকা-শরীয়তপুরগামী ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে সিটিং ও লোকাল বাসসহ ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে দেরগুণেরও বেশি ভাড়া আদায় করছে। পাশাপাশি বাসে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও গাদাগাদি করে পরিবহন করছে। কোনো নিয়মনীতি তারা মানছে না বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস শরীয়তপুর ঢাকা সড়কে নিয়মিত ভাড়া ২৫০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে তা বাড়িয়ে ২৯৪ টাকা করা হয়েছে। টিকিটে ২৯৪ টাকা লেখা থাকলেও ঢাকা থেকে শরীয়তপুর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৫০টাকা থেকে ৫০০ টাকা।
শরীয়তপুর-ঢাকা গ্লোরী এক্সপ্রেসের ভাড়া ছিল ২৫০ টাকা বর্তমানে টিকিটে ২৯৪ টাকা লেখা থাকলেও ঢাকা থেকে শরীয়তপুর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩৫০টাকা থেকে ৫০০ টাকা। বিআরটিসি, ঢাকা সখিপুর সরকে ৪০০ টাকা নির্ধারিত ভাড়া থাকলেও বর্তমানে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পরিবহনের কারণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে এবং যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে যাত্রীদের লাঞ্ছিতও হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যাত্রীদের লাঞ্ছিত করার কথা অস্বীকার করে গাড়ির চালক ও শ্রমিকরা বলছেন, শরীয়তপুর থেকে ঢাকা ঈদের আগে যাওয়ার পথে যাত্রী থাকে কম এবং ঈদের পর ঢাকা থেকে শরীয়তপুর আসার যাত্রীও কম থাকে। এ কারণে ঈদের দুদিন আগে ও ঈদের পরে কিছু অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়।
আনোয়ার হোসেন নামে এক বাস যাত্রী মুঠোফোনে বলেন, শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস যাত্রাবাড়ী থেকে কাজিরহাটে ৪০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। যারা ৪০০ টাকা ভাড়া দিতে রাজি হয়নি তাদেরকে জোরপূর্বক গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
দীপু বণিক নামে বাস যাত্রী বলেন, আমরা নিয়মিত বি আর টি সি বাসে ঢাকা থেকে সখিপুরে ৪০০ টাকা ভাড়ায় আসি। কিন্তু আজ ৫০০ টাকা নিয়েছে।
বাসযাত্রী মিরাজ পালোয়ান বলেন, আজ আমি ঢাকা থেকে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসে এসেছি আমার কাছ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া নিয়েছি, বেশি ভাড়া দিতে না চাইলে যাত্রীদের সাথে অনেক খারাপ আচরণ করে পরিবহনের স্টাফরা।
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, ঢাকার কাউন্টারের সব পরিবহন থেকে ভাড়া বেশি নিতেছে আমরা বলেছিলাম ৩০০টাকা থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে কিন্তু কোন কোন গাড়িতে ৪০০ টাকাও নিচ্ছে এটা শ্রমিকরা করতেছে বলে ফোন কেটে দেয়।
শরীয়তপুর আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম মাদবর বলেন, সকল শ্রমিকদের চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে মালিক সমিতি নির্ধারিত ভাড়া নিতে যদি কেউ বেশি নিয়ে থাকে প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য মুঠো ফোনে বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের নজরদারি রয়েছে এবং বর্তমানে শরীয়তপুর ও জাজিরায় দুইটি ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available