মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিমের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে ১ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাটিগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে একটি শোক র্যালি বের করা হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য ও এলাকাবাসী অংশ নেন। শোক র্যালিটি কাটিগ্রাম-আটিগ্রাম সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা প্রদক্ষিণ করে কাটিগ্রাম কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর রবিউল করিমের কবরে ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান হয় এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
বেলা ১২ দিকে ব্লুমস বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্লুমসের সভাপতি জি.আর শওকত আলীর সভাপতিত্বে ব্লুমস বিশেষায়িত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব আব্দুল আলীম খান, ব্লুমসের সদস্য সচিব শহিদ রবিউল করিমের ছোট ভাই শামসুজ্জামান, সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি, পরিচালক (অর্থ বিভাগ) মো. গোলাম সারোয়ার, আজীবন সদস্য মো. সানোয়ার হোসেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর দেওয়ান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, রাজবাড়ী সরকারি কলেজেট সহযোগী অধ্যাপক রকিবুল হাসান খান প্রমূখ।
স্মরণ সভায় রবিউলের সঙ্গে পরিচয়ের কথা তুলে ধরে যুগ্ম-সচিব আব্দুল আলীম খান বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকার সময় রবিউলের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে এই স্কুলের স্বপ্ন দেখেছিল। এরপর সেটি প্রতিষ্ঠা করে। একটি ছোট ঘর থেকে ধীরে ধীরে এখানে ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। তবে বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনায় বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও শিক্ষকরা বিদ্যালয়টি পরিচালনা করছেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের এই বিদ্যালয়টি পরিচালনায় সকলস্তরের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলে স্কুলের পাশে দাঁড়িয়ে এটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই রবিউলের স্বপ্ন বেঁচে থাকবে।
এসময় শহীদ এসি রবিউলের ছোট ভাই শামসুজ্জামান শামস বলেন, ২০১৬ সালের এই দিনে আমরা আমাদের ভাইকে হারিয়েছি। মানুষের জন্য দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি একটি বৃদ্ধাশ্রম ও বিশেষায়িত শিশুদের জন্য আবাসিক ভবন করতে চেয়েছিলেন। জঙ্গিদের হাত থেকে মানুষদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি শহীদ হয়েছেন। আমাদের তাকে ভালোবাসতে হবে। তাঁর আত্মত্যাগ আমাদের জন্য গর্বের। তার যেসব কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে, সেগুলোকে পূর্ণ করতে হবে। তার কাজগুলোকে ভালোবাসলেই তার প্রতি ভালোবাসা জানানো হবে। স্কুলটি পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে দেশি ও বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে জঙ্গিরা। খবর পেয়ে তাঁদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিম। এ সময় জঙ্গিদের ছোড়া গুলি ও গ্রেনেডের আঘাতে তিনি নিহত হন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available