রংপুর ব্যুরো: ক্ষেতে পানি সেচ দেওয়া ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র রংপুরের বদরগঞ্জ কৃষক আনোয়ার হোসেনসহ তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ৩০ জুন শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের বকশিগঞ্জ এলাকায় ও ১ জুন সকালে বদরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় কৃষক আনোয়ারসহ তার স্ত্রী, সন্তান, ভাগিনাসহ ৫জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এঘটনায় আল আমিন বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রোববার সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা প্রতিবেককে জানান, কৃষক আনোয়ার হোসেন রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের বকশিগঞ্জ এলাকায় তার বাড়ির পাশে সেচ পাম্প বসিয়ে দীর্ঘ এক যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে নিজের জমিসহ অন্যের জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছেন। জমিগুলো উচু হওয়ার সারাবছর সেচের পানি দিয়েই জমিগুলো চাষাবাদ করতে হয় তাকে। জমিতে পানি সেচ দিতে গেলে বিভিন্ন জমি দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নিতে হয়। আনোয়ার হোসেন সেভাবেই ড্রেন করে তারসহ অন্য কৃষকের জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছেন।
ঈদের পরের দিন শুক্রবার বিকেলে কৃষক আনোয়ার হোসেন জমিতে সেচ দিতে গেলে বিষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রামানিক পাড়ার মফিজুল, শফিয়ার, মনিরুজ্জামান ও দুলালসহ বেশ কয়েকজন দা, বটি, ছুরি, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে এসে আনোয়ারসহ তার স্ত্রী, সন্তানদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তার স্ত্রী, সন্তান, ভাগিনাসহ পরিবারের ৫ জন সদস্য আহত হয়। পরে এলাকার লোকজন আহতের উদ্ধার করে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গুরুতর আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরের দিন শনিবার আবারও তাদের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ছুরি বল্লম দা কুড়াল নিয়ে কৃষক আনোয়ার হোসেনকে মেরে ফেলতে বদরগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে চড়াও হয়। এসময় এলাকার লোকজনের বাধা ও পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যায়।
মামলার বাদী আল আমিন জানান, আমাদের জমিগুলো উঁচু হওয়ায় সারাবছর বৈদ্যুতিক মটর লাগিয়ে সেচের পানি দিয়ে চাষাবাদ করতে হয়। জমিতে পানি দিতে আমাদের এরিয়ার মধ্য দিয়ে ড্রেন বানিয়ে আমার পিতা আনোয়ার হোসেন আমাদেরসহ অন্যের জমিতেও পানি সেচ দিয়ে চাষাবাদে সহযোগীতা করছেন। আমাদের সহযোগিতা সন্ত্রাসীদের সহ্য হয়নি। তাই তারা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার বাবা, মা, বোন, ভাইয়ের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এমনকি আমার বাবা মাকে মেরে ফেলতে পরের দিন আবারও দা কুড়াল ছুরি বল্লম নিয়ে তারা বদরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। পরে এলাকার লোকজনের বাধায় তারা আর কিছু করতে পারেনি। আমরা এখন সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনার বিষয়ে বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিন্দি উল হাসান চৌধুরী শান্তু বলেন, আমি ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবরও নিয়েছি। আমি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার জন্য ওসি সাহেবকে অনুরোধ জানিয়েছি।
এব্যাপারে বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, আমিও ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। হামলাকারীদের দ্রুত ধরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available