মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের ঘিওরে চুরির অপবাদে এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তার দুই ছেলে ও ভাইকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে।
৩ জুলাই সোমবার ভোরে উপজেলার জোকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার জোকা গ্রামের সরুপ আলীর ছেলে প্রতিবন্ধী হারুনুর রশিদ, তার দুই ছেলে মারুফ হোসেন ও আতিকুর রহমান এবং হারুনুর রশিদের ভাই নুরুল ইসলাম। ভুক্তভোগী হারুনুর রশিদ ও অভিযুক্ত মো. আব্দুল লতিফের মধ্যে জমি নিয়ে পূর্ববিরোধ আছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, প্রতিবন্ধী হারুনুর রশিদ কৃষিকাজের পাশাপাশি হাঁস পালন করেন। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মাঠে বৃষ্টির পানি জমায় ভোরে ছেলেকে নিয়ে সেখানে হাঁস ছেড়ে দেয়ার জন্য যান তিনি। হাঁস ছাড়ার পর বাড়ি ফেরার পথে মো. আব্দুল লতিফের পুকুরে গোসল করতে নামেন তারা। এ সময় আব্দুল লতিফ এগিয়ে এসে তাদের চোর সম্বোধন করে গালিগালাজ করেন। এর প্রতিবাদ করলে আব্দুল লতিফ তার নিজস্ব লোকজন ডেকে এনে প্রতিবন্ধী হারুনুর রশিদ, তার দুই ছেলে ও ভাইকে মারধর করেন। এরপর মাছ চুরির অপবাদে তাদের বিরুদ্ধে ঘিওর থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন আব্দুল লতিফ। মার খেয়ে এবং পুলিশের ভয়ে এখন বাড়ি ছাড়া ভুক্তভোগী হারুনুর রশিদ ও তার ছেলেরা।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়াল খান বলেন, হারুনুর রশিদ একজন প্রতিবন্ধী, তাকে প্রতিবন্ধী কার্ডও করে দিয়েছি। শুনেছি উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তবে আব্দুল লতিফ ও হারুনুর রশিদের দুইজনের বাড়ি পাশাপাশি। তাদের মধ্যে জমি নিয়ে পূর্বের বিরোধ আছে বলে জানি। আমার বিশ্বাস হয়না হারুন চুরি করেছে, সে চুরি করার মত লোক না।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী হারুনুর রশিদ বলেন, আমি চকে হাঁস ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উনার পুকুরে গোসল করতে নেমেছিলাম, গোসল করা অবস্থায় তিনি আমাদের চোর বলে গালিগালাজ করেন। এরপর তার ভাইসহ কয়েকজন লোকজন ডেকে এনে আমাদেরকে মারধর করে। মারধর করার পর তিনি উল্টো আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল লতিফের মুঠোফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হারুন প্রতিবন্ধী না, ও একটা চোর। আমার পুকুরের বিশ হাজার টাকার মাছ চুরি করেছে। গতকালও চুরি করেছে, ধরতে পারিনি। এলাকার অনেক স্বাক্ষী আছে।
বিষয়টি নিয়ে ঘিওর থানার উপ-পরিদর্শক সিয়াম আহমেদ বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। হারুনুর রশিদের সাথে এখনো দেখা বা কথা হয়নি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, হারুন প্রতিবন্ধী কিনা জানিনা, তার বিরুদ্ধে মাছ চুরির অভিযোগ হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available