সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের বিয়ানীবাজারে ফাহমিদা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ১২ জুলাই বুধবার সকালে ঝুলন্ত অবস্থায় উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের কইরবন্দ গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ করে থানায় মামলা দায়ের করেন ফাহমিদার বাবা জমির উদ্দিন। মামলায় ফাহমিদার স্বামী আবিদুর রহমান, শ্বশুর দবির উদ্দিন এবং শাশুড়ি লিপি বেগমকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় তার স্বামী আবিদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ফাহমিদার বিয়ে হলে তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। বিয়ে প্রায় ঘরে ঝগড়া বিবাদ হতো। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে ঝগড়া হয় ফাহমিদার। সকালে তার বসত ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। তবে স্বামী ঘরে থাকা অবস্থায় কীভাবে আত্মহত্যা করলেন ওই গৃহবধূ, এ নিয়ে দেখা দেয় চাঞ্চল্য। যদিও স্বামীর দাবি পারিবারিক কলহের কারণে তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় ফাহমিদা। পরে বন্ধ ঘরেই সে আত্মহত্যা করে।
এদিকে ফাহমিদার মৃত্যুর খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান তার বাবা-মা ও ভাইয়েরা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাকে মানসিক নির্যাতন করছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বিয়ের তিন বছরেরও সন্তান না পাওয়ায় তাকে বিভিন্নভাবে মন্দ কথা শুনাতো তারা। এছাড়াও দুই পরিবারে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিবাদ চলছিলো বেশ কয়েকদিন ধরে। এসব কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন দাবি করেন ফাহমিদার বাবার বাড়ির লোকজন।
বুধবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারের আগে স্বামী আবিদুর রহমান জানান, বিয়ের তিন বছর হয়েছে, এখনও তাদের কোন সন্তান হয়নি। এ নিয়ে পরিবারে ঝগড়া-বিবাধ লেগেই থাকতো। ১১ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার সময় স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয় তার। এরপর সে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলে স্ত্রী ঘরের দরজা লাগিয়ে দেন। এর ঘন্টা খানেক পর আনুমানিক রাত ৪ টার সময় ডাকাডাকি করার পরও স্ত্রী দরজা না খোলায় দরজা ভেঙ্গে দেখেন স্ত্রী ফ্যানের রডের সাথে ঝুলে আছেন।
গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবার দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আবিদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবারে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available