মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ জন ডেঙ্গু রোগী মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদিকে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকায় হাসপাতালে আলাদা করে হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
গত ২১ জুলাই শুক্রবার থেকে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ১২ জন ডেঙ্গুরোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে ১০ জন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছে বলে জানান জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মো. রুমান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসে মতলব উত্তর এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়মিত রোগীদের পাশাপাশি ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসিবুল ইসলাম বলেন, জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এই মাসে এখন পর্যন্ত ৩০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসা নিয়েছেন আটজন ডেঙ্গু রোগী।
তিনি বলেন, এ বছর রোগীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেশি। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগীর চাপ আছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত চাঁদপুরে কোনো ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্ষা যতদিন থাকবে, ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করছি। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের।
ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। প্রথমে আমার টানা তিনদিন জ্বর ছিল। জ্বর নিয়ে আমি গ্রামে আসি। ডাক্তার দেখালে তিনি ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহে আমাকে পরীক্ষা করতে বলেন। পরীক্ষায় আমার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। আমি গত চারদিন ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছি।
মতলব উত্তর উপজেলার বেগমপুর থেকে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া রাজন (২৫) ও রাজনের মা জানান, চারদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাজনের অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলার ছেংগার বাজার মুন মেডিক্যাল সেন্টারের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. মারজান হোসেন বলেন, এখন প্রতিদিনই ২০-৩০ জন ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য আসেন। তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ জনের ডেঙ্গু পজিটিভ পাচ্ছি। এই সপ্তাহ সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করা না গেলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available