আশিকুর রহমান, কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধি: গত দুই মাস ধরে রাজধানীতে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি বছরে ৪ আগস্ট পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার, আর মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় তিনশ'। রাজধানীর পুরান ঢাকায় ক্রমান্বয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে পুরান ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে কবি নজরুল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।
কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির তথ্যমতে, এরই মধ্যে কলেজের ২২ শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন বিশ্বাস, সুদেব রায়, শিতাংশু ভৌমিক অংকুর ও সজীব আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের অভিষেক মল্লিক, চন্দন কুমার, জাকারিয়া বারি, আশিকুর রহমান ও তানভীর হোসেন, ইংরেজি বিভাগের আবিদ হাসান ও মোশারফ, বাংলা বিভাগের ইমরান হোসেন, মো. আজিজ ও তানজিলা আক্তার প্রাণীবিদ্যা বিভাগের রতন সরকার ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও প্রেস ক্লাব সূত্রে জানা যায়, সেখানকার অন্তত ১৬ শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত। তার মধ্যে ১১তম ব্যাচের মোমেনা বেগম, ইরফান আহমেদ, ১৩তম ব্যাচের আফরান, তারেক ও নুসরাত, ১৭তম ব্যাচ নৃবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী রৌদ্র ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, ১৪তম ব্যাচের আবদুল্লাহ, আমীর হোসেন, সুলতানা আক্তার, রিয়াজ উদ্দিন, রেজওয়ান, মাহমুদ ও রিপা এবং ১৫তম ব্যাচের তুহিন ও ওয়াদুদ রয়েছেন। এ ছাড়া ১২তম ব্যাচের জহির উদ্দিন ও আহসান ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র চন্দ্র সরকার মারা যান।
অপরদিকে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ১১ শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তারা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৌফিক, জাহানারা ও সাইদুর রহমান, বাংলা বিভাগের রায়হান উদ্দিন ও ফারুক হোসেন, পদার্থবিজ্ঞানের রাফি, ইতিহাস বিভাগের তাসলিমা বেগম ও নাছির উদ্দিন, ইংরেজি বিভাগের আব্বাস এবং গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা।
এছাড়া ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের আফরোজা বেগম, খালেদা আক্তার, জান্নাতি, জেরিন ও সাথী কুণ্ড ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে গত ২৫ জুলাই সাথী কুণ্ড মারা যান। তিনি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বিষয়ে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইফফাত আরা এশিয়ান টিভিকে বলেন, ‘প্রতিনিয়ত অসংখ্য ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে আসছে। তাদের মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই বেশি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কবি নজরুল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগ প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ ভর্তি হচ্ছেন। রোগীদের আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।’
জনস্বাস্থ্য ও প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রধান শর্ত হচ্ছে শরীরে তরল পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। সেক্ষেত্রে বেশি করে তরল খাবার গ্রহণ করা জরুরি। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে যদি তা না মানেন, তাহলে রোগীর অবস্থা আবারও খারাপ হবে। রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available