• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৩০:০৯ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৩০:০৯ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

রাঙ্গুনিয়ায় এক ওয়ার্ডেই বিলীন ১০ পাহাড়: ঝুঁকিতে শতাধিক পরিবার

৬ আগস্ট ২০২৩ সকাল ১০:২৮:৫৮

রাঙ্গুনিয়ায় এক ওয়ার্ডেই বিলীন ১০ পাহাড়: ঝুঁকিতে শতাধিক পরিবার

আব্বাস হোসাইন আফতাব, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম): রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসে ইতিপূর্বে প্রাণহানিসহ আহত হয়েছেন অনেকে। কিন্তু এরপরও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস রোধ করা যাচ্ছে না। উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডেই গেল কয়েক বছরের মধ্যেই অন্তত ১০টি পাহাড় বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এসব পাহাড়ের মাটি শুষ্ক মৌসুমে চলে যায় আশেপাশের ইটভাটায়। আবার সারাবছর ধরে পাহাড়ের মাটিতে চলে পুকুর-ডোবা ভরাটসহ নানা পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম। একইভাবে উপজেলার চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম, পৌরসভার ইছাখালী, কোদালা, ইসলামপুর, পোমরা, রাজানগর, পদুয়া, বেতাগীসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই নিয়মিত পাহাড় কাটা অব্যাহত রয়েছে। এসব এলাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস থাকলেও তা প্রতিরোধের কোনো উদ্যোগই নেই সংশ্লিষ্টদের। ফলে পাহাড়খেকোরা বেপরোয়া পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গুনিয়ায় ভয়াবহ পাহাড় ধসে ২১ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর এক বছর পর ২০১৮ সালে মোহাম্মদপুর ওই ওয়ার্ডেই পাহাড় ধসে তিনজন মানুষ মারা যায়। প্রতি বছর প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করেই দায়িত্ব শেষ করা হয়। বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থায়ীভাবে সড়িয়ে নিতে কিংবা পাহাড় কাটা বন্ধে দুয়েকটি অভিযান চালানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।

এই ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার বলেন, ‘পাহাড়ে যারা থাকেন, তারা সবাই নিম্ন আয়ের। তাদের সড়িয়ে নিলেও তারা দখল ছাড়ে না। বিষয়টি উদ্বেগজনক। এই বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আমরা মাসিক সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’

সম্প্রতি দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডটিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর, গলাচিপা, সোনারগাঁওসহ বিভিন্ন গ্রামে অন্তত কয়েক শতাধিক পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে পাহাড়ের ঢালে, পাদদেশে কিংবা পাহাড়ের চূড়ায়। যেকোনসময় পাহাড় ধসে প্রাণহানিসহ ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে আসতে পারে এসব বাসিন্দারের জীবনে। পাহাড় কাটা রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও থামানো যাচ্ছে না পাহাড় খেকোদের, অভিযোগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির।

ওই ওয়ার্ডের সোনারগাঁও নতুনপাড়া গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকাটিতে শতাধিক পরিবারের বসবাস। সবগুলো পরিবার বসবাস করছে খাড়া পাহাড়ের ঢালে। কিছু পরিবার ওই পাহাড়ের উপরই বসবসা করেন। বৃষ্টিতে পাহাড়গুলোতে মাটি ধসে পড়ার চিহ্ন রয়েছে। এরমধ্যেই রাতের আঁধারে পাহাড়গুলো কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোনারগাঁও নতুন পাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সৈয়দ বলেন, বনবিভাগের মালিকানাধীন এই এলাকায় দখলস্বত্বের ভিত্তিতে প্রায় ১০০টি পরিবার বসবাস করে অন্তত অর্ধশত বছর ধরে। ঝুঁকি আছে তারপরও নিম্ন আয়ের এই মানুষদের কোথাও যাওয়ার সুযোগ না থাকায় তারা এখানে থাকছেন বলে তিনি জানান।

ওই এলাকার সেলিম (৫০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার সন্তান কোরবান আলীর সহায়তায় পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়া যায়। কয়েকদিন আগেও চট্টমেট্রো-খ-১১০০৫৬ নাম্বারের একটি ড্রাম ট্রাকে করে রাতের আঁধারে পাহাড় কাটা মাটি পার্শ্ববর্তী লালানগর এলাকার একটি ডোবা ভরাট করতে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়। বিষয়টি তিনি অস্বীকার করলেও তার ঘরের কাছে পাহাড় কাটার স্পষ্ট আলামত দেখা গেছে।

ওই ওয়ার্ডটির গলাচিপা এলাকায় মূল মরিয়মনগর ডিসি সড়ক থেকে প্রবেশ মুখের কিছু দূর এগুলেই দেখা যায়, বেশ কিছু পাহাড় কাটা হয়েছে। কাটা পাহাড়গুলোর উপরই ঝুঁকি নিয়ে মাটির ঘরে বসবাস করছে অন্তত ১০টি পরিবার। বৃষ্টি এলেই ধসে পড়তে পারে ঘরগুলো। এই এলাকা থেকে বের হয়ে মোহাম্মদপুর থেকে একটু দূরে গিয়ে দেখা যায়, একটি পাড়ার অন্তত ২০টি পরিবার বসবাস করছে পাহাড়ি টিলায়। পাহাড়টি কেটে একেবারে মাটির টিলা বানানোর স্পষ্ট আলামত রয়েছে। বসতঘরগুলোর চারদিকে পাহাড়ি টিলাগুলো কাটতে কাটতে একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হলেও তারা সবাই সেখানে থাকছেন। তাদের আশা, মাটির টিলাগুলো এভাবে কাটতে কাটতে সমান করে ফেলতে পারলে সমান জায়গায় আর কোনো ঝুঁকি থাকবে না। তাই বনবিভাগের লোকজনদের ফাঁকি দিয়ে এভাবে মাটিগুলো কাটছেন বলে তারা স্বীকার করেন।

আনোয়ারা বেগম (৫০) নামে এক নারী এসময় বলেন, বৃষ্টি হলে সবাই ঘর ছেড়ে সমতলে থাকা একটি ঘরে আশ্রয় নেন। পাহাড়ের টিলাগুলোতে বসবাস করা সবাই অটোরিক্সা চালক, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই কোথাও যাওয়ার অবস্থা তাদের নেই বলে তিনি জানান।

এসব বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রফু বলেন, ‘আমার পুরো ওয়ার্ডই পাহাড়ি অঞ্চল। এখানকার অধিকাংশ জায়গা বনবিভাগের। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ করতে এবং পাহাড় না কাটতে নিয়মিত আমি বলে আসছি। এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তরেও এই ব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু পাহাড় খেকো সিন্ডিকেটের কারণে তা বন্ধ করা যাচ্ছে না।’

এই ব্যাপারে বনবিভাগের স্থানীয় বিটের ফরেস্টার মো. মাহবুব বলেন, ‘খবর পেলেই আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহাড় কাটা বন্ধ করি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ




সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৪:২০:৫২





আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হাওরের চাষিরা
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৩:৩৬:৫৫