আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ডাক্তারের ফি চাওয়াকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা, মারধর ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।
আখাউড়াস্থ বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির উদ্যোগে ৬ আগস্ট রোববার বেলা ২টার দিকে পৌরশহরের রাধানগর মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা, ভাংচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।
এর আগে গত ২৮ জুলাই বিকালে পৌরশহরের রাধানগরস্থ দি কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ডায়াগনিস্টিক স্টোরের মালিক, কর্মচারী ও কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবুসহ ৪ জন আহত হযন। রাতেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশীষ সাহা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ পৌরশহরের দেবগ্রামের মাহফুজ ভুঁইয়া (৬৫) ও তার পুত্র সুমন ভুঁইয়া (৩৫)কে আটক করে। বর্তমানে মাহফুজ ভূইয়া জামিনে আছেন এবং সুমন ভূইয়া কারাগারে আছেন।
মানববন্ধনে পৌরশহরের ১৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও প্রতিনিধিরা অংশ নেযন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম, সুবল দাস, মো. আব্দুল আওয়াল, মো. বাবুল মিয়া, পরিমল সাহা, মো. কুদ্দুস মিয়া, মো. রৌশন মিয়া, মো. তুহিন মিয়া, জহর লাল চৌহান, মো. আমির, মো. শফিক মিয়া, অংগ্য পাল, বিশাল সাহা, পলাশ আহমেদ প্রমুখ।
ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। অদূর ভবিষ্যতে যদি কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে তাহলে শুধু কর্মবিরতি নয়, হয়তো এ প্রতিষ্ঠানগুলো একবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আখাউড়ার জনগণ আমাদের মাধ্যমে যে সেবাগুলো পায় সেগুলো থেকে বঞ্চিত হবে।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশীষ সাহা বলেন, ডাক্তারের ফি চাওয়ায় প্রথমে আমাকে এবং আমার প্রতিষ্ঠানের কমীর্কে লাঞ্চিত করে। পরে লোকজন নিয়ে এসে আবারও হামলা করে। আমি প্রশাসনের নিকট ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি।
জানা যায়, ২৮ জুলাই শুক্রবার বেলা সাড়ে ৫টার দিকে সুমন ভূঁইয়া স্ত্রীসহ তার শিশু সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসককে দেখাতে ওই ক্লিনিকে আসে। এসময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মী সালমা আক্তার সুমনের কাছে চিকিৎসকের ফি চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন সালমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এসময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সাংবাদিক আশিষ সাহা এগিয়ে এলে তাকেও ধাক্কা মেরে গালমন্দ করে সুমন। এক পর্যায়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান সুমন। খবর পেয়ে বিকেল ৬টার দিকে ওই সেন্টারের যান বাড়ির মালিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু। এর কিছুক্ষণ পরে সুমন ১০-১৫ জন লোক নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে নারী কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করে সুমন ও তার সহযোগীরা। এসময় সাংবাদিক বিশ্বজিৎকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে শান্ত পাল ও আনন্দ পাল নামে আরও দুজনকে মারধর করে তারা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available