রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় টানা বর্ষণের কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। নিচু এলাকায় শতাধিক ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত গুমাই বিলসহ ডুবে গেছে উপজেলার অধিকাংশ ফসলী জমি। জমির পানি কয়েকদিন থাকলে রোপা আমন পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা।
তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা সহনশীল জাতের আমন চারা রোপণের ফলে পানি কয়েকদিন থাকলেও চারা নষ্ট হওয়ার আশংকা নেই।
উপজেলার গুমাই বিলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় সব ফসলী জমি পানিতে ডুবে গেছে। বিল ও নদীর আশপাশে কিছু কিছু নিচু এলাকায় ঘরবাড়ি আংশিক ডুবে গেছে।
মরিয়মনগর এলাকার বাসিন্দা গুমাই বিলের কৃষক রশিদ আহমদ বলেন, ৩০ কানি জমি বর্গা নিয়ে আমনের চারা লাগিয়েছি। টানা বৃষ্টিতে সব আমন চারা পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকদিন পানি থাকলে সব চারা পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
একই এলাকার আরেক কৃষক মাহাবুব হোসেন বলেন, ১০ কানি বর্গা জমিতে বেসরকারি সংস্থা থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আমন চারা লাগিয়েছি। সব চারা পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকদিন পানি থাকলে সব চারা পচে যাবে। পথে বসা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় থাকবে না।
এসময় কৃষক আবদুস সাত্তার, আবদুল মান্নান, মো. নাজুসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, গুমাই বিলের আশেপাশে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণে বৃষ্টির পানি বিল থেকে সহজে নিষ্কাশন হতে পারে না। পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিলের জমি পানিতে ডুবে থাকছে। পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনা না হলে গুমাই বিলের শত শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ ব্যাপারে গুমাই বিলের পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশনের ইছামতি ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, টানা বৃষ্টিতে গুমাই বিল ডুবে গেছে। বিলের আশেপাশে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনের বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিলে এবার ৩ হাজার ১শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে গুমাই বিলেই লাগানো হয়েছে ১ হাজার ৭০০ হেক্টর। টানা বর্ষণের কারণে পানিতে ডুবে গেছে সব চারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, এবার বেশির ভাগ কৃষক বন্যা সহনশীল জাতের আমন চারা লাগিয়েছে। টানা কয়েকদিন পানি থাকলেও এসব চারা নষ্ট হবে না। গুমাই বিলের পানি যাতে নেমে যায় সেজন্য গুমাই সংলগ্ন কাটাখালি স্লুইচগেট খুলে দেয়া হয়েছে। পানি যাতে দ্রুত নিষ্কাশন হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।
ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি ডুবে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার বিষয়টি খবর নেয়া হচ্ছে। ডুবে যাওয়া ফসলি জমির পানি যাতে সহজে নেমে যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available