ফয়সাল আজম অপু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ৫২-৫৪ কেজিতে নয় ৪০-৪৫ কেজিতে মণ হিসেবে আম বিক্রয় করতে চান চাষিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষি ও উদ্যোক্তারা সেই দাবিই জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রীর কাছে। আমের মণ ৫২-৫৪ কেজিতে হয়, এটা জেনে বিস্মিত হয়েছেন মন্ত্রীও। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি দ্রুত সমাধানের।
নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। ৪০ কেজিতে মণ হলেও চাষি এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কাছে ৫২-৫৪ কেজিতে মণ হিসেবে আম কিনে থাকেন আড়তদাররা। প্রতি মণে ১২ থেকে ১৪ কেজি আম বেশি দিতে গিয়ে চাষি এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাই তারা এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ কেজিতে আমের মণ হিসাব করার জন্য মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সম্মেলন রুমে ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে কৃষি সেক্টরে কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম উদ্যোক্তা ও ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব গণমাধ্যম কর্মী আহসান হাবিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের কাছে এ লিখিত আবেদন প্রদান করেন ।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৫ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনে জড়িত চার লক্ষ আম উৎপাদনকারী । বর্তমান সরকার ও কৃষি মন্ত্রণালয় আমচাষিদের নানান ধরনের সহযোগিতা দিয়ে এলেও সঠিক ওজনে দিতে না পারায় বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত আমের প্রায় ৫‘শ কোটি টাকার অতিরিক্ত আম আড়তদারদের অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। পাশাপাশি রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় প্রতিবছর প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার অতিরিক্ত আম আড়তদারদের দিতে হচ্ছে।
৫২-৫৪ কেজিতে মণ হিসেবে আম বিক্রিতে বাধ্য হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার প্রায় ৪ লক্ষ চাষির উৎপাদিত আমের ৫ ভাগের ১ ভাগ ৩-৪ হাজার আড়তদারের পকেটে চলে যায় দাবি করে এ ব্যাপারে মন্ত্রীর হস্থক্ষেপ দাবি করেন নেতৃবৃন্দ। তবে পচনশীল পণ্য হিসেব ৪৫ কেজিতে মণ হিসেবে উৎপাদকদের আম বিক্রয়ে আপত্তি নেই জানিয়েছেন তারা ।
এসময় কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারসহ কৃষি ও ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব, শিবগঞ্জ ম্যাংগো কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামিম, বরেন্দ্র কৃষি ও সাধারণ সম্পাদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশন মুনজের আলম, আমচাষি ও উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান মিলন, আবু নুহু, মাসুদ রানা, রফিকুল ইসলাম, মতিউর রহমান।
ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবীব বলেন, ৪০-৪৫ কেজিতে মণে আম বিক্রয় করতে আম চাষিদের কোনো আপত্তি নাই, কিন্তু ৫২-৫৪ কেজিতে মণ বিক্রয় করে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তাই ৪০-৪৫ কেজিতে আমের মণ নির্ধারণ করার জন্য কৃষি মন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন করেছি।
এ প্রসঙ্গে কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৫২-৫৪ আমের মণ, আমি বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে প্রথম জানলাম, যাতে আম চাষিদের এমন ক্ষতি আর না হয়, সেটা আমরা দেখব।
এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানেরও আশ্বাস দেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available