দিনাজপুর প্রতিনিধি: আজওয়া, মরিয়মসহ সৌদি আরবের বিখ্যাত বিভিন্ন জাতের খেজুর এখন চাষ হচ্ছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার স্বজনপুকুর গ্রামে। কুয়েত প্রবাসীর উদ্দ্যোক্ততা জাকির হোসেনের খেজুর বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় পাকা খেজুর।
তার বাগানে রয়েছে আজওয়া, মরিয়ম, বার্গি, আমবার, মেরজন, খরিনি জাতের মিষ্টি ও সুস্বাদু খেজুর। ইতিমধ্যেই তাকে বানিজ্যিকভাবে খেজুর চাষে সবধরনের সহযোগীতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিনাজপুর কৃষি বিভাগ ।
বাংলাদেশেসহ বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে রমজান মাসে ইফতারে সৌদি খেজুরের জনপ্রিয়তা অনেক। বাংলাদেশে রমজান উপলক্ষে প্রতি বছর আমদানি করা হয় কয়েক টন খেজুর। কিন্তু গত কয়েক বছরে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুর এখন বাংলাদেশেই চাষ হচ্ছে।
ফুলবাড়ী পৌর এলাকার স্বজনপুকুর গ্রামে কুয়েত প্রবাসী মো. জাকির হোসেনের খামারে এখন বিভিন্ন জাতের সৌদী খেজুরের আবাদ হচ্ছে। ২০ বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে ছিলেন তিনি । সেখানে থাকাকালীন পরিকল্পনা করেন দেশের মাটিতে কীভাবে খেজুরের চাষ করা যায়। এক পর্যায়ে দেশে আসার সময় ১২ কেজি খেজুর কিনে এনে দেশে চারা করার চেষ্টা করেন এবং এতে তিনি সফলও হন। বর্তমানে তার এ বাগানে রয়েছে মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেরজন ও আম্বার জাতের খেজুর গাছ। ইতিমধ্যে ফলও এসেছে এসব গাছে। এমন খবরে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসছেন জাকির হোসেনের খেজুরের বাগান দেখতে।
খেজুরের বাগান পরিচর্যাকারী মো. ফজলুর রহমান জানান, এ খেজুরের চারা লাাগিয়ে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না। বাগানে তেমন কোনও বিশেষ যত্নও নিতে হয় না, তবে আর্বজনা পরিস্কার, জৈবসার ও পানির সঠিক প্রয়োগ থাকলে সুন্দর গাছ এবং ফলন পাওয়া যায়।
বাগান মালিক জাকির হোসেন জানান, কুয়েত থাকাকালিন ইচ্ছে ছিল নিজ দেশে খেজুরের আবাদ করবো। আল্লাহর রহমতে আমার সে ইচ্ছে পুরন হয়েছে। ২০২০ সালে আমার ২০ শতাংশ জমিতে রোপন করা ১৯ টি খেজুর গাছে এখন ফল এসেছে। খেজুরগুলো গোলাকার ও লম্বা। প্রত্যেক গাছের এক একটি গোছায় ৪০০-৫০০ খেজুর ধরেছে। আবাদের পরিধি আরও বাড়াতে ইতোমধ্যে আরও ১ হাজার খেজুর গাছের চারা তৈরী করেছি । দেশে প্রথম আমার খেজুর বাগানের গাছে এখন ফল এসেছে। আলহামদুল্লিহ, কুয়েতে থাকা অবস্থায় দেশে খেজুরের বাগান করার যে স্বপ্ন ছিলো, তা বাস্তবায়ন করতে পেরে আমি খুব খুশী। আমার বাগানের খেজুর গুলো খুব মিষ্টি এবং সুস্বাদু হয়েছে।
খেজুর বাগান দর্শণার্থী মো. আব্দুস সালাম ও সাহেদ আলী জানান, অজ পাড়াগায়ে খেজুর বাগান চাষ করে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন জাকির। খুব চমৎকার বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। তার দেখাদেখি আমরাও এখন নিজ গ্রামে খেজুরের বাগান করতে চাই। তবে আমরা মনে করি প্রথম অবস্থায় এ ব্যাপারে তার সর্বাত্বক সহযোগীতার প্রয়োজন হবে।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. রুম্মান আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, খেজুর বাগান তৈরীর পরিক্ষামুলক আবাদে তিনি সফলতা লাভ করেছেন। দেশীয় বাজারে এ খেজুরের চাহিদা থাকায় আমরা আশাবাদী। উদ্যোক্তা জাকির হোসেন বাণিজ্যিকভাবে যদি সৌদি আরবের এ খেজুর চাষাবাদ করেন তাহলে তিনি লাভবান হবেন। এতে করে আমরা তাকে আগামীতে খেজুরের আবাদ বৃদ্ধিতে পরামর্শসহ সরকারের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা প্রদানের চেষ্টা করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available