পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানকে তার কক্ষে তালা মেরে আটকে রাখার প্রতিবাদে সমাবেশ ও মানববন্ধন এবং অর্ধদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
১৬ আগস্ট বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদ ভবনের সামনে দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিক্ষক নেতারা। পরে বিকেল ৩টায় উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর কাছে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি তুলে দেন তারা। ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির আওতায় না আনলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মিয়া (মুন্না) বলেন, ‘আমরা অর্ধ কার্য দিবস ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি। কালকে থেকে স্বাভাবিকভাবে আমাদের কর্মসূচি চলবে এবং ক্লাস-পরীক্ষাও চলবে।’
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতার ফসল এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য ধারাবাহিকভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি হাতে নিব।’
কক্ষে তালা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান বলেন, ‘সিনথি কানিজ ফারহানা নামে এক ছাত্রীকে ক্ষমতা প্রদর্শন করে পরীক্ষায় পাস করাতে চেয়েছিল ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর। এই বেআইনি দাবি না মানাই ক্ষিপ্ত হয়ে রুমে তালা দেওয়ার মূল কারণ বলে ধারণা করছি। এছাড়াও কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউট্যাবের কমিটি হয়েছে, যার সাধারণ সম্পাদক আমি। এ জন্যও রুমে তালা দিয়ে থাকতে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, ‘এঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বিএনপিপন্থী প্রফেসর হেমায়েত জাহান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে এবং ছাত্রলীগকে বিতর্কিত ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুতই পদক্ষেপ নেব।’
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু এ প্রতিবেদককে জানান, ‘শিক্ষকের কক্ষে তালা দেওয়ার ঘটনাটি অবশ্যই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জানা যায়, ১৪ আগস্ট সোমবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে কতিপয় শিক্ষার্থী ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক ও কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানকে অফিস কক্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। মুঠোফোনে খবর পেয়ে উক্ত বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকের উপস্থিতিতে কর্মচারীগণ তালা ভেঙ্গে উক্ত শিক্ষককে মুক্ত করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available