বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের মা নুর নেহার বেগম ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে বীরগঞ্জ থানায় মুন্না আরিফকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ওই শিক্ষার্থী বীরগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র মুন্না আরিফ। সে উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুজালপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, অভিযুক্ত মুন্না আরিফের বাসা তাদের বাড়ির পাশেই। গত দুই বছর থেকে সে তাদের মেয়েকে স্কুল যাওয়া আসার রাস্তায় প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরও মুন্না আরিফ তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে বাসায় ডেকে নিতো মুন্না। বাসা ফাঁকা থাকায় মেয়েকে কু-প্রস্তাব দেয়, তাতে রাজি না হলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এভাবেই প্রতিনিয়তই জোর করে ধর্ষণ করে আসছিল মুন্না আরিফ।
তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। এরপর থেকে প্রতিনিয়তই তাদের শারীরিক মেলামেশা চলতে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী অসুস্থ হলেও বিষয়টি পরিবারের কাছে গোপন রাখে। ফলে ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শরীরের গঠন পরিবর্তন হলে একপর্যায়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে তাকে এড়িয়ে চলে। এভাবে কালক্ষেপণে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে। ঘটনাটি বাবা-মাকে খুলে বললে আলট্রাসনোগ্রাফিতে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি স্পষ্ট হয় ভিকটিমের।
পরে ঘটনার বিষয়টি মুন্না আরিফের বাবা-মাকে জানালে তাদের বিয়ে হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা দেখিয়ে বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না ছেলের পরিবার।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্তের বাবা মশিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করুন।
জানা গেছে, তিনি বীরগঞ্জ উপজেলা সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের গাড়ির ড্রাইভার। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না।
স্থানীয়রা বলেন, এ ধরনের ঘটনায় যে জড়িত তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। শাস্তি হলে এরকম ঘটনা ঘটাতে কেউ সাহস পাবে না।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানান, অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available