মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় গাংনী পৌর শহরের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী সমিতির কার্যালয় চত্তরের জমি দখল মুক্ত করতে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকোলে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বাসচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, রহিদুল ইসলাম, হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আলমগীর হোসেন মিঠু, মিকুশিশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বদিউজ্জামান, শাহিন এবং আরবিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইমরান হোসেন। অপর পক্ষের আহতরা হলেন, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ইয়াদ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমানের ছেলে মোজাম্মেল হক, ছাবদার আলীর মেয়ে সুমাইয়া খাতুন, হাবিবুর রহমানের ছেলে নিজাম উদ্দীন, হাবিবা খাতুন, সোহেলী খাতুন এবং মাছুরা খাতুন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জমির মালিকানা দাবি করে হাবিবুর রহমানের ছেলে কুতুবুদ্দিন জানান, আমাদের পৈত্রিক মালিকানাধীন জমিতে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দখলের চেষ্টা করছে শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পেশি শক্তি ব্যবহার করে হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনি ক্যাডার বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে জমির দখল থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বাধা দিলে মহিলাসহ অন্তত ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করে এবং আমাদের ঘড়বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন বলেন, গাংনী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড বাঁশবাড়ীয়া গ্রামে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নিজস্ব জমি ও স্থায়ী ভবন রয়েছে। যেখানে ১টি হলরুম ও ২টি পাশাপাশি রুম রয়েছে। সীমানা প্রাচীর দিয়েও আমাদের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সে সম্পদ ২৭ বছর ধরে ঘেরা রয়েছে।
দীর্ঘদিন আগে ১৯৯৭ সালে এই জমিটি ইব্রাহিম মন্ডলের কাছ থেকে ক্রয় করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতি । এই জমির প্রথম মালিক হাবিবুর রহমান জমিটি বিক্রি করেন মহসিন আলীর কাছে। মহসিন আলী বিক্রি করে নুরুল হুদার কাছে। নুরুল হুদা বিক্রি করে ইব্রাহিম মন্ডলের কাছে। পরে ইব্রাহিম মন্ডলের কাছ থেকে আমরা জমিটি ক্রয় করি। ১৯৯৭ সাল থেকে জমিটি আমাদের দখলে রয়েছে এবং এখান থেকেই আমরা আমাদের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করি। কিন্তু হঠাৎ করেই জায়গাটি দখল করে নেয় অভিযুক্তরা। এদিকে জায়গাটি দখল মুক্ত করতে গেলে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের উপর হামলা করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে হামলাকরীরা।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, জমিজমার বিষয়টি আদালত ফয়সালা হবে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ. খালেক ও পৌর মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available