সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক অসংখ্য ছোট-বড় খানাখন্দে ভরে গেছে। এর মধ্যে প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার রাস্তার পিচ বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে। ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটির জীর্ণদশার কারণে যাত্রী পরিবহণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির প্রায় ১৫ কিলোমিটারই খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং, গোয়াইনঘাট সদর, লেঙ্গুড়া, বিছনাকান্দি, রুস্তুমপুর, তোয়াকুল ও নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের প্রধান রাস্তা সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। অনেকটা মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই এ সড়কে চলাচল করছেন স্থানীয়রা । এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মজীবী মানুষের চলাচলের পাশাপাশি বিছনাকান্দি ও পান্তুমাই পর্যটনকেন্দ্রে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটে এ সড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের সালুটিকর বাজার থেকে তোয়াকুল ইউনিয়নের পেকেরখাল ব্রিজ পর্যন্ত ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কারের দাবি জানানে হলেও কতৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না।
জমির মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের চালকরা সহজে যেতে চান না, বৃষ্টি হলে তো কথায় নেই। কাদা পানিতে পুরো রাস্তা যেন ধান খেতে পরিণত হয়।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৬ সালে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিলো। সালুটিকর-গোয়াইনঘাট ২৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার শেষ না হতে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কটির বেশিরভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায়ও এ সড়কটি বিপর্যস্ত হয়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সড়কটি পরিদর্শন করেন। এসময় গুরকচি-গোয়াইনঘাট সদর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে সাড়ে ৫ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়। এ অংশের সংস্কার সমাপ্তির পথে, অন্যদিকে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নয়াবাজার সংলগ্ন হাটগাং সেতু, তোয়াকুল সিএনজি স্টপেজ সংলগ্ন ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তোয়াকুল সেতু এবং বঙ্গবীর পয়েন্ট সংলগ্ন আরও ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবীর সেতুর বরাদ্দ দেন। এগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ৩ টি সেতুর এপ্রোচ সড়কের কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) রফিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের গুরকচি থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও সড়কটির তোয়াকুল অটোরিকশা সিএনজি স্টপেজ থেকে বঙ্গবীর পয়েন্ট পর্যন্ত সংস্কার কাজে টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আছে। সালুটিকর হতে তোয়াকুল পর্যন্ত বাকি রাস্তা টেকসই ও মজবুত করার লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাক্কলন নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির এডিবি প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হলে রাস্তার বাকি কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় প্রতিবছর সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের সিংহভাগ অংশ তলিয়ে যায়। বন্যার পানি সড়ক থেকে নামার পর ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available