ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: সাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালির নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে লিবিয়া নিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ দাবি করা মানব পাচারকারী চক্রের ৪ দালালকে গ্রেফতার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। এরমধ্যে দু’জন নারী সদস্য রয়েছেন।
৪ সেপ্টেম্বর সোমবার মধ্যে রাতে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো, ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর মাইজহাটি এলাকার কালু মিয়া, মোরাদ মিয়া, জনুফা বেগম ও অনুফা বেগম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আয়ুব আলী তার ছেলে কবির মিয়াকে ইতালি পাঠানোর উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় বসবাসরত ফারুক মিয়ার স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে স্বজনদের মাধ্যমে ফারুক মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে ফারুক জানায়, তার ছেলে কবিরকে সরকারিভাবে প্রথমে লিবিয়া নিতে হবে এবং সেখান থেকে ইতালিতে পাঠাতে খরচ পড়বে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফারুক ও তার স্বজন কথামতো ভুক্তভোগী আয়ুব আলী তার জমি বিক্রি করে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কয়েকজন লোকের সামনে শহিদা আক্তারের কাছে ১০ লাখ টাকা ও ছেলের পাসপোর্ট জমা দেন। টাকা দেয়ার কিছুদিন পর বিদেশগামী কবিরকে লিবিয়া নেয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার পর সেখানে ফারুক মিয়া তার বাসায় আটকে রেখে আরও টাকা দেয়ার জন্য নির্যাতন শুরু করে। এসব নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে এবং ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। নয়ত তার ছেলেকে ইতালি না পাঠিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজ বসতঘর বিক্রি ও ধারদেনা করে দালালের দাবি করা ২০ লাখ টাকা ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর অভিযুক্ত আসামি অনুফা বেগমের কাছে দেন। ওই সময় অনুফা বেগম টাকা হাতে পেয়ে ফারুককে সাথে লিবিয়ায় যোগাযোগ করে আয়ুব আলীকে জানান ১ সপ্তাহের মধ্যে ছেলে কবিরকে ইতালি পাঠানো হবে। কিন্তু তারা ইতালি না পাঠিয়ে নানান তালবাহানা করেন। লিবিয়ায় আটক করা কবিরকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকলে, তা সহ্য করতে না পেড়ে ফারুক মিয়ার বাসা থেকে সে পালিয়ে যায়। পরে চাপাইনবাবগঞ্জের আব্দুল্লাহ নামের একজনের মাধ্যমে পুনরায় ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে পৌঁছে।
এঘটনায় ৩ নারীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ভৈরব থানা পুলিশ দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলার বাদী আয়ুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলে কবিরকে নির্যাতন করায় এবং মিথ্যা প্ররোচণা দিয়ে আমার কাছ দুই দফায় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই দালালরা। এঘটনার বিচার চেয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত ২/৩জনকে অভিযুক্ত করে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করেছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available