মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মেয়ে চারুশিল্পী তারিন সুলতানা(২৭) নামের এক গৃহবধুর রহস্যজনকভাবে কুষ্টিয়ায় স্বামীর বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তারিন।
৬ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কাজী নজরুল ইসলাম লেন (কোর্টপাড়া) এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় তারিনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তারিন সুলতানা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের মশিউর রহমানের মেয়ে ও কুষ্টিয়া কোটপাড়ার নবীন হোসেনের স্ত্রী।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তারিন লেখেন, ‘আমার শেষ ইচ্ছা। আমার মৃত্যুর পরে আমার মুখ আমার মা বাবা এবং আমার হাসবেন্ডকে না দেখানো হোক এবং আমার লাশ আমার মা-বাবার বাড়িতে না নিয়ে, আমার দাদী বাড়ি নিয়ে আমার শেষ কাজটুকু করা হোক। আমার দাদীর কাছে আমার কবর দেয়া হোক । আমি আমার ভুলের জন্য অনুতপ্ত মা। আমি আর কখনোই ভুল করবো না মা। আমাকে ক্ষমা করে দিও।’ তারিন তার ছোট্ট মেয়েকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘আমাকে মাফ করে দিস মা।’
তারিনের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, আড়াই বছর আগে নবীন হোসেনের সঙ্গে তারিনের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের এক বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে। শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তারা। তারিন একজন আত্মনির্ভরশীল ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি চিত্রাংকনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার পারদর্শিতা ছিল। ‘তাইয়িবা’ নামে একটি অনলাইন বুটিক ফ্যাশন হাউজ চালাতেন তিনি। ঘটনার সময় বাড়িতে শুধু তারিন ও তার মেয়েই ছিলেন। দুপুরের কোনো এক সময় তারিন নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
তারিন সুলতানার চাচা মাসুদ রানা জানান, নবীন প্রায় সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল তারিনকে। তারিনকে হত্যা করে নবীন সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে, ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তর রিপোর্ট হাতে পেলে হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটা জানা যাবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available