স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী ও বাসন এলাকায় সহজলভ্য হয়ে পড়েছে তিতাসের অবৈধ সংযোগ প্রদান । বেশিরভাগ বাড়ির মালিক দালাল চক্রের মাধ্যমে তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে এলাকার শতশত গ্যাসের চুলা । মাঝে মাঝে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ভ্রামম্যাণ আদালত এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও কোন কাজে আসছে না । বিচ্ছিন্ন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আসে আগের অবস্থায় ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছরের ১৫ জুন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জিএমপি কোনাবাড়ীর পেয়ারা বাগান এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার লাবনী । অভিযানে অন্তত ৩০টি বাড়ির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় । জব্দ করা হয় ৫ শতাধিক চুলা এবং উত্তোলন করা হয় ২২০ ফুট নিম্ন মানের লাইন। এ সময় অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের দায়ে সাত জনকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকালে সংযোগ বিছিন্ন করা হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোনাবাড়ী শাহীন স্কুলের উত্তর পাশে হাজী শহীদ, শাহ আলম, আব্দুস সাত্তার, শাহ আলম এর শ্বশুর, নজরুল ইসলাম, রাজ্জাক, শেখ ফরিদ, আব্দুল মান্নান, মঞ্জনু, শাহীন মিয়া কবির হোসেন, নাসির উদ্দিন, রিপন মিয়া, হাজী শহীদের ফাতেমা ভিলা, পুকুর পাড় শাহজাহান মিয়ার বাড়ি, খালেক সাবের ইটখোলার পিছনে আক্কাস এর বাড়ী, জরুনে ফুলজানের বাড়িতে অবৈধ্য সংযোগ দিয়ে গ্যাস জ্বালানো হচ্ছে ।
এছাড়াও জরুনে হাজী সাবের ইটখোলার সামনে জায়গা ভাড়া নিয়ে ইউনুস ও মঞ্জু অবৈধভাবে অতিরিক্ত চুলা লাগিয়ে গ্যাস ব্যবহার করছে। জানা যায়, জায়গার মালিক মজিবুর খানকে মাশোয়ারা দিয়ে চলছে তারা। জরুনেই কাফা পালোয়ানের বাসার সামনে জয়দেবপুর ভিলা এবং তার পশ্চিম পাশে নোয়াখালী জাহাঙ্গীরের বাসা, আইসক্রিম ফ্যাক্টরির সামনে সোহরাবের বাসায় তিন থেকে চারটি চুলা পাশ থাকলেও দশ থেকে ১৫টি চুলা অবৈধভাবে ব্যবহার করে আসছে।
নগরীর বাসন থানাধীন ১৭নং ওয়ার্ডের মোগড়খাল এলাকায় সড়কের দুই পাশের বাড়িতেই জ্বলছে অবৈধ চুলা। দুইটা বা চারটা চুলার অনুমোদন নিয়ে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্যাসের পাইপ লাইন। ফলে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার গ্যাসের অপচয় ও বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উৎসুক জনতা ক্ষোভের সাথে স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ হাজ্বী নামের এক ব্যক্তিকে মূলহোতা বলে অভিযোগ করেন। তবে অবৈধ গ্যাস সংযোগের সাথে জড়িত নন বলে জানান, অভিযুক্ত ইউনুস হাজ্বী।
এবিষয়ে জানতে ইউসুফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি টাকা মনঞ্জু মামাকে দেই। সে কী করে জানি না। পেয়ারা বাগানে হাজী শহীদের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তার ম্যানেজার রিসিভ করে বলেন, আমি শুধু ভাড়া উঠাই। বাড়ির মালিক জানে কীভাবে গ্যাস সংযোগ দিছে। শাহ আলম বলেন, আমার ১৪টি চুলা জ্বলে, অনুমোদন আছে চারটি। বাসার কেয়ার টেকার বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, তিতাসের চন্দ্রা জোনের অফিস সহকারী হয়েও উজ্জ্বলর নামে এক ব্যক্তি ম্যানেজারের গাড়ি নিয়ে বিভন্ন ফ্যাক্টরি ও আবাসিক এলাকায় অভিযানে যায়।
এ বিষয়ে জানতে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একা যাই না। সাথে টিম লিডার থাকে। আপনার কিছু জানার থাকলে অফিসে এসে ম্যানেজার স্যারের সাথে কথা বলেন।
গাজীপুর তিতাস গ্যাসের আঞ্চলিক বিপণন কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহাদাত ফরাজি বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। শুধু তাই নয়, অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের জরিমানাসহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একই এলাকায় চার থেকে পাঁচবার অভিযান পরিচালনা করেছি। একটি অসাধু চক্র এই কাজগুলো করে আসছে। তথ্য পেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available