পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনা পাথরঘাটার কাঠালতলীতে জ্যান্ত মুরগির পা কেটে রক্ত বের করে সেই রক্ত রোগীর মুখ ও হাতে পায়ে মেখে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক নারী মিনারা বেগমের বিরুদ্ধে। একই সাথে ছাগলের গলার নিচে ছুড়ি দিয়ে অল্প অংশ কেটে রক্ত বের করে সেই রক্ত দিয়ে চিকিৎসার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার জীবিত মুরগি ও ছাগলের রক্ত দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কথা সাংবাদিকের সাথে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মিনারা বেগম। তিনি নিজে একসাথে দুটি ধর্ম পালনের কথাও স্বীকার করেছেন। এ সকল কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার স্বামী খাদেম শামীম।
মিনার বেগম পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার শ্বশুরের ইউসুফ কবিরাজের বাড়িতে বসেই এমন চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
সরেজমিন গিয়ে মিনারা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে বিরোধ হলে ১৬ বছর আগে চট্টগ্রামে গৃহকর্মীর কাজে যান তিনি। সেখানে গিয়ে তান্ত্রিক কবিরাজ বাবা তাহেরীর আস্তানার সন্ধান পেয়ে তার ভক্ত হন। সেখান থেকে তিন বছর সাধনা করে স্বপ্ন যোগে আধ্যাত্মিকতা লাভ করেন। এরপর দেশের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায় এসে ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার, আলসার, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের মিলন, জাদু-টোনা থেকে মুক্তিসহ নানা গোপন রোগের চিকিৎসা শুরু করেন। এ চিকিৎসায় পাথরঘাটার অনেক রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তি সুস্থ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মিনারা জানান, তার উপর দুটো জিন (আত্মা) ভর করে আছে। একটি ভালো অপরটি খারাপ। ভালোটিকে ফুল ফল গোলাপ জল দিয়ে পবিত্র রাখতে হয়। তার জন্য ঘরের কোণে একটি আস্তানা তৈরি করে রেখেছেন। অপরটির জন্য তাজা রক্ত খাবারের জন্য দিতে হয়। তাই বিভিন্ন রোগের উপর নির্ভর করে জীবিত মুরগি ও ছাগলের তাজা রক্ত প্রয়োজন হয়। তাই জীবিত মুরগির পা কেটে ও ছাগলের গলার নিচ থেকে কেটে ঝুলিয়ে রেখে রক্ত বের করে রোগীর গায়ে মেখে গোসল করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয় । এর বিনিময়ে ১৬৫১ টাকা থেকে ২৬৫১ টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক ও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা গোলাম কিবরিয়া জানান, এই কুসংস্কার ইসলাম সমর্থন করে না। এছাড়াও কোনো প্রাণীকে জবেহ না করে অঙ্গহানির মাধ্যমে রক্ত বের করে কষ্ট দেয়া একটি বর্বরতা। এদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ আলম হাওলাদার জানান, বিষয়টি জানার পর খোঁজ খবর নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available