রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: রাঙ্গুনিয়ায় একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মূলহোতা, মাদক সম্রাট খ্যাত আলোচিত সন্ত্রাসী আজিজুল হক শামীমকে (৩৫) অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার উত্তর ঘাটচেক নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শামীম এলাকায় ইয়াবা শামীম নামে পরিচিত। সে ওই এলাকার মৃত ফয়েজ আহমেদের ছেলে। গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গোচরা বাজারে ত্রাস সৃষ্টি করেন শামীম। সে গ্রেফতার হলেও প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা অস্ত্রটি উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গোচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা।
শামীমকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, তার বিরুদ্ধে মাদক, মারামারিসহ এলাকায় একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। মাদকের মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গ্রেফতার শামীম এলাকায় নিয়মিত মাদক কারবার করে আসছিল। কতিপয় পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সখ্যতা থাকা শামীমের ভয়ে তটস্থ এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেও ভয় পায়। এলাকায় জনশ্রুতি আছে, পুলিশকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে সে ঘাটচেক রাস্তার মাথা এলাকায় ইয়াবা ও গাঁজার ব্যবসা করেন। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্পটে সে মাদক সাপ্লাই দেন। গত ২৬ আগস্ট তার মাদকের ডেরায় হানা দিয়ে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার ও মাদক উদ্ধার করলেও সে পালিয়ে যায়। সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে রাঙ্গুনিয়ার গোচরা বাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় দলবল নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রহাতে ত্রাস সৃষ্টি করেন সন্ত্রাসী শামীম। ব্যস্ততম কাপ্তাই সড়কের মাঝপথে মোটরবাইক দিয়ে গাড়ি আটকিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে দুই যুবককে বেধড়ক মারধর করে শামীম ও তার সহযোগিরা। দুই যুবককে উদ্ধার করতে গিয়ে এসময় আরও কয়েকজন সাধারণ মানুষও আহত হয়। গোচরা বাজারের সিসিটিভি ফুটেজে প্রকাশ্যে রিভলবার উঁচিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতে দেখা যায়। এসময় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এভাবে অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে হামলার ঘটনার পরও ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু এসব ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় কোন ব্যবস্থায় নেয়া হয়নি বলে জানান থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী।
ব্যবসায়ি ইস্কান্দর হোসেন জানান, এভাবে একটি বাজারে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করলেও সেটি উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেই পুলিশের। শামীমের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ ঘাটচেক এলাকার বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগ নেতা সরোয়ারকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার মামলাও রয়েছে। জমি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে তার সঙ্গে প্রায়শই দেখা যায় এবং তার এসব অপকর্মের সঙ্গে তিনিও সহযোগী বলে ধারণা করেন স্থানীয়রা। তার মাদক ব্যবসা ও নানা অপকর্মের সহযোগী সাদ্দাম হোসেন ও বিজয় তালুকদার এখনও রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে পুলিশ শামীমেকে গ্রেফতার করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরলেও তার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন গোচরা বাজারের ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা।
ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, ভিডিও ফুটেজ যাচাই বাছাই করে প্রকৃতপক্ষে যদি অস্ত্রের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available