বরিশাল (উত্তর) প্রতিনিধি: দেশের বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতে ইলিশ পাঠানোর কারণ জানাতে পারেনি বরিশাল জেলা মৎস্য আড়ৎদার সমিতি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল। ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার পোর্ট রোড মৎস্য মালিক সমিতির কার্যালয়ে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পেছানোর দাবিতে করা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
নিরব হোসেন টুটুল জানান, এখন দেশের বাজারের তুলনায় কম দামে ভারতে ইলিশ পাঠালেও নদী-সাগরে ইলিশ বেশি ধরা পড়লে তখন সমন্বয় হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ভারতের নদী-সাগরে কিন্তু এতো অভিযান নেই। সেখানে প্রায় সারা বছরই ইলিশ আহরণ করতে পারে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, আমাদের নদী-সাগরে চাপিলা ও জাটকা রক্ষায় আরও কঠোর অভিযান চালানো হোক। এ বছর ইলিশের এতো কম আমদানি বিগত ১০ বছরেও দেখা যায়নি। শুধু মিঠা পানির নদীর মাছে দেশের ইলিশের চাহিদা পূরণ হয় না। আর এবার তো মিঠা পানির নদীতেই মাছের স্বল্পতা। আর সাগর উত্তাল থাকার কারণে জেলেরা বিগত বছরের মতো এবার সাগরেও তেমনভাবে মাছ শিকার করতে পারেননি।
বরিশাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে প্রায় ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেলেও যদি ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আসে তাহলে ব্যবসায়ীরা রফতানি করবেন কীভাবে- প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এবার যখন নদীতে ইলিশ আসবে তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে, কিন্তু বিগত বছরগুলোতে দেখেছি নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের পেটে প্রচুর ডিম থাকছে। তাই অন্তত একমাস অভিযান পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
গত বছরেও আমাদের দেশ থেকে ৪ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। সেখানে ব্যবসায়ীরা এক হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করেছিল। কারণ যখনই জেলেরা মাছ শিকারে যায় তখনি কোনো না কোনো নিষেধাজ্ঞা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকে।
মৎস্য মালিক সমিতি মনে করে, সরকারের ইচ্ছায় মাছ রপ্তানির কারণে কালো বাজারে মাছের চোরাচালান যেমনি কমেছে, তেমনি সরকারের আয় বেড়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। তবে সরকার ব্যবসায়ীদের কল্যাণে ইলিশ রপ্তানির যে কার্যক্রম শুরু করেছে, তাও মাছের অভাবে মুখ থুবরে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অভিযানের সময় পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। ওই সময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইলিশ সাধারণত মাসের ওপর নির্ভর করে উপরে উঠে আসে না। উঠে আসে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশে। সুতরাং বৃষ্টি বাড়লে ইলিশ বাড়বে।
তিনি বলেন, কাগজে কলমে নয় প্রকৃতপক্ষেই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। আগে দেশের জনসংখ্যা ছিল কম আর সারা বছর সব ধরনের ইলিশ শিকার করতো। কিন্তু এখন জনসংখ্যা বেড়েছে। তারপরও কিন্তু সবাই ইলিশ পাচ্ছে। দামের বিষয়টি বললে সেটি বাজার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে। উৎপাদনে ইলিশ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। বিগত ১২ বছরের ব্যবধানে বরিশাল বিভাগে ৪৬ শতাংশ ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে। দেশে মোট উৎপাদিত ইলিশের ৬৬ শতাংশ পাওয়া যায় বরিশাল বিভাগের নদ-নদীতে। বরিশাল থেকে দ্বিতীয় চালানে দেশের বাজারের চেয়ে ৩৫০ টাকা কম মূল্যে কেজিপ্রতি দাম নির্ধারণ করে রফতানি করা হয় ভারতে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available