নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতায় গ্রাহকের একই বিদ্যুৎ বিল একাধিকবার উল্লেখ করে ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাহক বিল পরিশোধ করার পরও আগের মাসের বিল চলতি মাসের বিলের কপিতে সংযুক্ত করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
সদর দপ্তরে গেল একমাস ধরেই শোনা যাচ্ছে বিল পরিশোধ করতে এসে গ্রাহকদের নানা ভোগান্তির কথা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমস্যা নিয়ে বিলের কাগজ সংশোধন করতে এসেছেন অনেকে। শ্রমজীবী মানুষ কাজ রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে বিল সংশোধন করতে। অথচ এসব বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সদর থেকে কোন ধরনের নোটিশ বা বিল সার্ভার কাজের জন্য সমস্যা হতে পারে উল্লেখ করে প্রচারণা বা মাইকিং করা হয়নি।
অনেকে জুলাই মাসের বিল পরিশোধ করেছেন ব্যাংকে বা সরাসরি পল্লী বিদ্যুতের অফিসে। কিন্তু তাদের বিল আবারও আগস্ট মাসে উল্লেখ করে বিলের কপি দেওয়া হয়েছে। এতে গ্রামের মানুষের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
এছাড়া যেসব গ্রাহক আগস্ট মাসের বিল পরিশোধ করেছেন তাদের বিল পুনরায় আবারও সেপ্টেম্বরে উল্লেখ করে দুইমাসের বিল একসাথে করা হয়েছে। গ্রাহক বিল পরিশোধ করার পরও এমন ঘটনা দেখে হতাশ হয়ে সদর দপ্তরে এসেছে বিলের কপি নিয়ে সংশোধন করতে। আর সংশোধনে জন্য দাঁড়াতে হচ্ছে লম্বা লাইনে।
আগে থেকে কোন নোটিশ বা কোন ধরনের মাইকিং, বিলের কপির সাথে চিঠি না দেওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দূরদূরান্তের মানুষদের। খেটে খাওয়া দিনমজুর, শ্রমিক, কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নবাবগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর থেকে চুড়াইন ও শোল্লা থেকে কৈলাইলসহ প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের বেশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে এমন অভিযোগ মিললেও এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে কোন প্রতিকার করতে পারেনি ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ। বিল প্রস্তুতের জন্য নতুন সার্ভারে অনেক নিয়মনীতি পরিবর্তন এসেছে মর্মে উল্লেখ করে, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সদর দপ্তরের ভবনের নিচতলা থেকে দুতলা পর্যন্ত কোথাও কোন নোটিশ টাঙ্গানো হয়নি। এসব বিষয়ে এশিয়ান টিভির প্রতিবেদক কথা বলতে গেলে নোটিশসহ গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিলের সার্ভার নতুন মেন্যু ও পরিবর্তনের বিষয়ে প্রচারণার উদ্যোগ নেবেন বলেন জানান (জিএম) জেনারেল ম্যানেজার৷
দিঘীরপাড় গ্রামের অব্দুল হালিমের অভিযোগ, জুলাই মাসের বিল দিলেও সেপ্টেম্বর মাসের বিলে ওই মাসের টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। অফিসে আসার পর সংশোধন করে দিয়েছে। কিন্তু এই সংশোধন তো শেষ না। আমরা কৃষক মানুষ। কাজ রেখে এখানে এসেছি। এভাবে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে।
বর্ধনপাড়া গ্রামের মো. শামসুল ইসলাম এসেছেন বিল সংশোধন করতে। আগস্টের বিল পরিশোধ করেছেন ব্যাংকে। তবুও সেপ্টেম্বর মাসের বিলে আগস্টের বিলে যুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংশোধন করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত। তারপর সংশোধন হলো।
পাতিলঝাপ এলাকার আনোয়ার হোসেনেরও একই অভিযোগ। তিনিও বিল পরিশোধ করেছেন ব্যাংকে। তবুও তার আগস্টের বিল সেপ্টেম্বরে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি একজন দিনমজুর। কাজ না করলে আমার সংসার চলে না। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ থেকে একই বিল দুইবার উল্লেখ করায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হলো।
এ বিষয়ে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেন এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, বিল প্রস্তুতের সার্ভার একটু পরিবর্তন হওয়ায় গ্রাহকদের একটু সমস্যা হচ্ছে। আগের বিল কপিতে বিল দেওয়ার তারিখ দুটি থাকতো। এখন শেষ সময় উল্লেখ করে একটি তারিখ রয়েছে। ওই তারিখের মধ্যে বিল জমা না দিলে ব্যাংক আর বিল জমা নেবে না। পরবর্তী মাসে বিল আসলে ওই বিলের সাথে যুক্ত করা হবে।
এমন পরিবর্তন ও গ্রাহকদের ভোগান্তি যেন না হয় সেজন্য গ্রাহকদের কোনো নোটিশ বা ব্যাংকে নিদিষ্ট তারিখের পর বিল নেবেন না এই মর্মে ব্যাংকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি জানান, নোটিশ দেওয়া হয়নি। তবে, দ্রুত নোটিশ দেওয়া হবে এবং বিভিন্ন প্রচারণার মাধ্যমে আগামী মাস থেকে বিলের সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available