ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসি থেকে উত্তরণে উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের জন্য তার ব্যবসায়িক সুবিধা (জিএসপি+) আরও ছয় বছর বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের ব্যবসায়িক (জিএসপি) সুবিধাগুলো তিন বছরের পরিবর্তে ছয় বছর করার জন্য অনুরোধ করছি। কেননা স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মতো বাংলাদেশ এখন কোভিড-১৯ মহামারি এবং যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে রয়েছে।’
ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রীর কর্ম ব্যস্ততার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক সুবিধার সম্প্রসারণ এলডিসি দেশগুলোর উত্তরণের পর সমৃদ্ধির যাত্রাকে মসৃণ করবে।
ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যাংক (ইআইবি) এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশন এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনাসহ অন্যান্য পার্শ্ব ইভেন্টসহ মোট নয়টি ইভেন্টে যোগ দেন।
ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন, ট্রেড কমিশনার এবং ইসি নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস, ইসি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জেনেজ লেনারসিক, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. হোয়ার এবং ইসি ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ কমিশনার জুটা উরপিলাইনেন এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আলাপকালে তার সাথে দেখা হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিই শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রীকে এমন একটি বিশ্ব ফোরামে যোগদানের আমন্ত্রণ প্রমাণ করেছে বিশ্ব ও ইইউ প্রধানমন্ত্রীর পাশে রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগের সবচেয়ে অনুকূল পরিবেশ উল্লেখ করে ইইউভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশে আরো বৃহত্তর বিনিয়োগের আহবান জানান।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মূলত রোহিঙ্গা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সম্পর্কের বিষয়টি এসেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার, মানবিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। কেননা এই মহৎ উদ্দেশ্যেই দেশের ৩০ লাখ মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন।
মোমেন জানান, ইসির ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জেনেজ লেনারসিক রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশকে বাড়তি সাড়ে দশ মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও ইইউ নেতারা বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে বিদ্যমান ৫০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ইইউর সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনায় সম্মতি দিয়েছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available